এক পথ-ভ্রষ্ট জাতির গল্প

Please log in or register to like posts.
পোস্ট

একটা জাতি  হয়ত উন্নতির শেখড়ে আরোহন করতে পারে , হতে পারে সম্মানের উচ্চতায় হিমালয়ের মত ,তবে তাঁদের পাপাচার   তাঁদের পতন কে ততটাই দ্রুত করে যেভাবে  হিমালয়ের বড়ফ ধস নামে। আজকে আমরা জানবো তেমনি এক জাতির কথা ।  সামুদ জাতির কথা বলছি। যাদের কাছে সালেহ (আ:)  রাসুল হিসেবে প্রেরিত হয়েছিলেন। তাদের এলাকা শস্য-শ্যামলিমায় পরিপূর্ণ ছিল। সবুজের সুন্দরের চাদরে মোড়ানো ছিল তাঁদের অঞ্চল ।বাগবাচির অন্ত ছিলোনা,সুন্দরের অভাব ছিলোনা, ঝর্নার সৌন্দর্য ও ছিলো  তথাপি তাঁদের মনে কালিমার কমতি ছিলোনা ।যে সৃষ্টি কর্তা তাঁদের সব দিয়েছেন তাঁর প্রতি তাঁদের কৃতজ্ঞতার অভাব ছিলো।হেন খারাপ কাজ নেই তারা করতনা, ডাকাতি-রাহাজনি ,খুন সব ক্ষেত্রেই ছিলো তাঁদের ঝোক। মহান আল্লাহর নির্দেশে হযরত সালেহ (আঃ)  তাঁদের কে ডাকলেন সত্যের পথে। সামুদ জাতির লোকেরা  হযরত সালেহ (আ) এর উপর বিশ্বাস স্থাপন করতে অপারগতা প্রকাশ করে যতক্ষন না তিনি তাদের অর্থাৎ সামুদ জাতিকে কোন মোজেজা না দেখায়।  তাঁদেরকে বলা হলো এমন যেন না হয় যে মোজেজা দেখানর পর ও তারা ঈমান আনলোনা।  কওমের লোকেরা বলল তারা মোজেজা দেখা মাত্র ঈমান আনবে.যখন সামুদ জাতিকে জিজ্ঞেস করা হলো তারা কোন মোজেজা দেখতে চায় , তখন তারা জানালো তারা চায় সম্মুখের পাহাড় বা বসতির পাথর থেকে একটি গর্ভবতী উষ্ট্রী বের হবে। শুধু উষ্ঠ্রীর আগমন নয় তারা এও চায় ,সে উষ্ঠ্রী যেন সাথে সাথেই সবার সামনে বাচ্চা প্রসব করে। আল্লাহর মহিমা অসীম তিনি পারেন না এমন কিছু নেই , তিনি জানেন না এমন কিছু নেই । হযরত সালেহ (আ)  আল্লাহর নিকত দোয়া করলেন। আল্লাহর হুকুমে উক্ত পাথর থেকে একটি উষ্ঠ্রী বের হয়ে আসলো এমন কি সাথে সাথে বাচ্চাও প্রসব করলো।

 

 

জুনদা ইবনে ওমর সাথে সাথেই ঈমান আনলেন, তবে অন্যরা ঈমান আনার আগেই কওমের অন্য  লোকেরা তাদের বিভ্রান্ত করলো। হযরত সালেহ (আ) তাঁর কোমের লোকদের বোঝালেন, যা হয়েছে তা আল্লাহর ইচ্ছায় হয়েছে। আল্লাহর ইচ্ছেতেই এই উষ্ট্রী এসেছে।   আল্লাহ এই উষ্ট্রী পালনের দায়িত্ব ও এই জাতির উপর দিয়েছেন।  তিনি সামুদ জাতির লোকদের সাবধান করে দিলেন যেন এ উষ্ট্রীর কোন কষ্ট না হয় ।এর ক্ষতি হলে তাদের নিস্তার নেই ।তারা কিছুদিন এ দায়িত্ব পালন করলো, ধীরে ধীরে তারা বিরক্ত হয়ে উঠছিলো । তারা উষ্ট্রী টি কে লালন পালনের  কাজ থেকে রেহা চাইছিলো। ষড়যন্ত্র হতে থাকে উষ্ট্রী টিকে মেরে ফেলার ,তবে একে হত্যার সাহস  কারো হচ্ছিলোনা। পরে আসলো রমনীর ধূম্রজালের ফাঁদ । সামূদ নামক এক সুন্দরী নারী নিজে মিসদা নামক এক ব্যক্তির সামনে উপস্থাপন করলো, আর আরে্ক সম্পদশালী রমনী তাঁর  সুন্দরী মেয়ে কায়দার কাছে আনলো।     তারা দুজনি     মিসদা আর কায়দার কে বলল  তাঁর যদি উষ্ট্রী টি কে হত্যা করে তবেই তারা বিয়ে করতে পারবে আর উপভোগ করতে পারবে সুন্দরী রমণী দ্বয়কে । মিথ্যের বেড়াজালে আটকা পড়লো মিসদা আর কায়দার।  তারা উষ্ট্রিটিকে হত্যার পরিকল্পনা করলো,আর  এ ব্যাপারে জাতির অন্যদের সাহায্য চাইলো।  উষ্ট্রীটিকে পরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যা করা হলো ।শুধু এতটুকুতেই তারা ক্ষান্ত হয়নি, তাদের এও সীদ্ধান্ত ছিল যে তারা হযরত সালহে (আ)  এবং তাঁর পরিবার কে হত্যা করবে। পরবর্তিতে কেও জিজ্ঞেস করলে জানাবে তারা কিছুই জানেনা।  উষ্ট্রি টীকে হত্যার পর এর বাচ্চাটি  চিৎকার করতে করতে পাহাড়ে উঠে এক সময় পালিয়ে গেলো।হযরত সালেহ (আ) এ সম্পর্কে অবগত হওয়ার পর বললেন যে তাই হইলো যা নিয়ে তিনি শঙ্কিত ছিলেন। এখন তাদের জন্য(সামূদ জাতির জন্যে) আজাব ছাড়া আর কিছুই নেই।  ৩ দিনের মধ্যেই তাদের উপর আল্লাহর আজাব নেমে আসার কথা বললেন তিনি।  শেষ পর্যন্ত তাই হলো, আর এটা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মানুষদের  জন্য শিক্ষনিয় একটা ঘটনা হয়ে রইল  ।  এ থেকে যারা শিক্ষা গ্রহন করেছে তারা আল্লাহর রহমত প্রাপ্তের দলে থাকবে নিশ্চই।   যুগে যুগে পথ ভ্রষ্ট জাতি সমূহের জন্যে এটা একটা দৃষ্টান্ত, কঠিন দৃষ্টান্ত।

ফেসবুক কমেন্টস

Reactions

0
0
0
0
0
0
Already reacted for this post.

প্রতিক্রিয়া

মন্তব্য করুন