শালী ও পাঁচমিশালি

Please log in or register to like posts.
পোস্ট

প্রত্যেক মানুষ মূলত তিনটা ধাপ পার করে আর সেটা হলো জন্ম, মৃত্যু এবং বিয়ে। অনেক জোকসে পড়েছি মানুষ নাকি দুই প্রকার হয়” বিবাহিত মানুষ আর অবিবাহিত মানুষ”। আবার কোথাও পড়েছি যে লোক বিয়ে করে সে একটা গাধা আর যে বিয়ে করেনা সেও একটা গাধা। আমি দুটি স্টেপই পার করেছি তাই জানি এসব কেন বলা হয়। যাই হোক আমার আজকের রচনাটি বিবাহ নিয়ে নয়। এটি মূলত শালী নিয়ে। আমি সব সময় ভাবতাম আমার বউয়ের অনেক গুলো বোন থাকবে আর আমার সাথে খালি ত্যারামি করবে। সেটা আমার ভাগ্যে জোটেনি। কারণ বিয়ের পর দেখেছি আমার শালী তো নেই তার উপর তিন চারটা বাড়িতে শুধু ভাগ্নি আর ভাতিজীর সমাহার। প্রথম প্রথম আফসোস করতাম। তবে আমার এক বন্ধু মিলন(ছদ্মনাম)  এর আবস্থা দেখে আমার সেই সখ আর আফসোস দুটোই পান্তাভাতে পরিণত হয়েছে। বেচারা কেবল মাত্র বিয়ে করেছে। আমাকে দাওয়াত করেছিলো(আর কোন বন্ধুকে দাওয়াত করেনি) কিন্তু যেতে পারিনি। বিয়ের দিন নাকি তার শালীগণ বিয়ের গেট আটকিয়েছিলো। পরে বেচারাদের প্রায় ৪ হাজার টাকা খসিয়েছে। আরো ঘটনা জোর করেই শুনে নিলাম।বরের বসার জন্য যে স্টেজ সাজানো হয় তার পিছনে বিছানার মত করে সাজানো ছিলো। সবাই বরের আগমনে খুশি। বর বসতে গিয়ে সপাং করে তলিয়ে গেল নিচে।

 

কাহিনী কি? আসলে সব তার শালীদের বুদ্ধি। তার বসার জায়গায় শুধু খড় দিয়ে পুরণ করে রেখেছিলো(মানসম্মানের চৌদ্দটা বেজে গেছে)। প্রথম দিনের কাহিনী শুনে হাসতে হাসতে দাঁত লেগে যায় আবস্থা। বুঝলাম আমার বন্ধু মিলনের কপালে দুঃখ আছে। কিছুদিন বাদে মিলন আমাকে তার শালীদেরকে নিয়ে আরো কিছু ঘটনা শেয়ার করলো যা আমাকে রীতিমত ২ ৩ বছরের আয়ু বাড়িয়ে দিয়েছে। মিলনের এক শালী,তার নাম ছিলো মিনি। সেই মিনি একদিন তার দুলাভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে এলো। কিছুক্ষণ বাদে মিলন বাড়িতে এসেই টয়লেট গেল। টয়লেট সেরে দেখে ট্যাপে পানি নাই(আসলে মিনি বন্ধ করে দিয়েছে)।বেচারা এখন কি করবে ভেবে পায় না। প্রায় আধা ঘন্টা পর বেচারা বের হয়ে আসলো ওই আবস্থায়। এই লজ্জাজনক কাহিনী শোনার পর আমি তাকে একটা বুদ্ধি দিলাম। তাকে দুই টাকার হাইড্রোজ (দুই চিমটি খেলে পাতলা পায়খানা ধরবে)কিনে নিয়ে যেতে বললাম। এরপর প্রায় এক সপ্তাহ মিলনের দেখা নেই।  হঠাৎ একদিন দুপুর বেলা দেখা হলো তার সাথে। চেহারায় কেমন ক্লান্তি ভাব। বললাম “কিরে কি হয়েছে তোর?। যা শোনালো তাতে হাজার ভোল্টের শক খেলাম। তার মিষ্টি শালী হাইড্রোজ কে চিনি মনে করে দুলাভাইকে চা বানিয়ে খাইয়েছে। আর তাতেই বেচারার তিনদিন ডাইরেক্ট মোশন হয়েছিলো। আমি ভেবে পাইনা শালীগুলো এত দুষ্টু টাইপের হয় কি করে? এর কিছুদিন বাদে মিনির ছোটটির আগম্ন ঘটেছিলো তার বাড়িতে। রাতে ভাত খাওয়ার পর দুলাভাই পান আনতে বলেছিলো, তার পানের ভিতরে আদরের শালী দুইটা মাঝারি সাইজের পাথর ঢুকিয়ে দিয়েছে(সুপারির বদলে)। আর মহা সুখে বেচারা চিবোতে গিয়ে দাঁতের আবস্থা খারাপে একদম একাকার। এইতো কয়েক দিন আগে মিলনের সেই পিচ্চি শালী এসে ঘুরে গেলো তার বাড়িতে। বললাম এবার কিছু করেনি?

বললো এইবারের আবস্থা আরো ভয়ানক, সবার সামনে দৌড়ে  এসে লুঙি ধরে টান মেরেছে(ভাগ্য ভালো জোর ছিলোনা অর্ধেক খুলেছে)। দিনের বেলা ঘুমন্ত দুলাভাইয়ের বিছানায় পানি ঢেলেছে(সঠিক জায়গায়)। সবথেকে ভয়ানক ব্যাপার হলো তার দুই শালী বুদ্ধি করে চুলকাটা মেশিন দিয়ে দুলাভাইয়ের মাথায় হালচাষ করেছে। ফলে দুলাভাইয়ের মাথা এখনো ন্যাড়া। আমি সব শোনার পর তাকে অভয় বাণী দিলাম”এই সব কোন ব্যাপার না। কয়েকদিন পর সব ঠিক হয়ে যাবে।তোর শালী আছে বলেই এমন করে আমার যে নেই কে এমন করবে?

বন্ধুকে শান্তনার বানী দিয়ে আসতে আসতে আবেগে কেঁদে ফেললাম।ভাগ্যিস আমার কোন শালী নেই। নইলে আমার মাথাও আজ ন্যাড়া থাকতো…….

 

  • রচণাকালঃ১ জুন ২০১৮

 

 

ফেসবুক কমেন্টস

Reactions

0
0
0
0
0
0
Already reacted for this post.

প্রতিক্রিয়া

মন্তব্য করুন