লম্বা জ্যামে অনেক পড়েছি।তবে আজকের কথা ভিন্ন।রাত ১২ টায় গাড়ি ছেড়ে এখনো কুমিল্লা পার হতে পারলাম না। বাজে ৪:০০ টা। শুনলাম, অনেক জায়গায় উন্নতিরচেষ্টায় এই ফল , । চারদিকে লাইট অফ।সব গাড়ি প্রান হারিয়েছে আগেই। ঝিমিয়ে আছে ড্রাইভার রা। আমাদের গাড়ি চালক আরো এক কাঠি বেড়ে । মাথায় বালিস দিয়ে ইঞ্জিনের উপরের জায়গাটায় শুয়ে পড়েছে। আমি গিয়ে ভাব জমাবার চেষ্টা করলাম। কিছুক্ষন কথা বলে আমাকে পাঠিয়ে দিল,”যান যান সিটে যান, ঘুমান,আমিও ঘুমাবো” সবাই যে যার মত রাস্তায় ঘুরছে,গাড়ি গুলো ঠায় দাঁড়িয়ে। গাড়ি চালকেরাও ঘুম।
কোথায় জানি হিন্দি সিনেমার গান বাজছিলো,এখন সেখানে বিরহের গান।কিছুক্ষন পর সেটাও থেমে গেলো।একি ঘুম পুরী নাকি মৃত্যু পুরী তাও বুঝা দায়।মাথার উপর একটা ফ্যান কষ্ট করে ঘুরছে। গাড়ির চালক এই মাত্র উঠলো, দুই তিন টা হর্ন মেরে আবার মাথার নিচে বালিশ দিয়ে শুয়ে পড়লো। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কখন ছাড়বে, সে বলল ‘কাইল ভুরে’ আমি সেই ভুরের অপেক্ষায় আছি। এইত চলছে গাড়ি যাত্রা বাড়ি।
একটা এম্বুলেন্স এক ঘন্টা ধরে সাইরেন বাজিয়ে যাচ্ছে। কিছু করার নেই, এম্বুলেন্স টা একেবারে জ্যামের মাঝখানে। থেমে থেমে রোগীর স্বজন দের কান্নার আওয়াজ ভেসে আসছে। সে করুন চিৎকার রাতের বাতাস কে ভারি করে তুলছে। যে সময়টায় , প্রায় সকাল ৪:৩০ এ গাড়ী ছাড়লো । সে এম্বুলেন্স এর মানুষেরা রাস্তায় বসে আছে, তাঁদের চোখ রক্তশূন্য । আর বুঝি তাঁদের তাড়া নেই, খবর নিয়ে দেখলাম তাঁদের প্রয়োজন ফুরিয়েছে, মৃত্যু পথযাত্রী মানুষ্ টা এখন আর নেই , সে এখন অনন্ত যাত্রার পথে । এই পৃথিবীর কোন জ্যাম বা চাঞ্চল্য তাকে আর স্পর্শ করবেনা…।