সাধারণ মানুষের জীবনও হতে পারে অনুপ্রেরণার গল্প

Please log in or register to like posts.
পোস্ট

আমার পরিচিত অনেকে ২৪/৭ এবং বছরে ৩৬৫ দিনই মন খারাপ দ্বারা আচ্ছন্ন থাকে। মন থাকলে সেটা ভাল বা খারাপ হওয়া স্বাভাবিক ব্যপার।তবে অনেকের ব্যপারটা কেমন যেন ন্যাকামি মনে হয়। মানছি সবার দুঃখ তার নিজের কাছে বড়। এক সময় আমি নিজেও এরকমই ছিলাম।বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর কিছু অল-ওয়েজ হাসিখুশি মানুষের দেখা পেলাম। শোনা যাক তাদের দুটি অনুপ্রেরণার গল্প।

এক, হলের এক বড় ভাইয়া ছিলেন। যিনি আড্ডাতে বসলে সবাইকে মাতিয়ে রাখতেন।একদিন ভাইয়ার রুমে গেলাম।অদ্ভূতভাবে ভাইয়া নিরব।ঘটনা কি ভাই? আস্তে আস্তে এরকম এক ঘটনা জানলাম যেটা শুনতে আমি প্রস্তুত ছিলাম না। ভাইয়ার আম্মু মারা গেছেন সেদিনই। উনি ছিলেন উনার সৎ মা,যিনি ভাইয়াকে ছোট বেলায় বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন।ভাইয়া এর-তার বাড়িতে লজিং থেকে পড়াশোনার খরচ জুগিয়ে এক সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হোন।প্রতি ঈদে উনি কখনো বাড়ি যেতেন না,কারণ তার তো বাড়ি থেকেও ছিল না।অথচ এই ভাইয়াই তাঁর টিউশনির টাকা বাঁচিয়ে নিজের জন্য কিছু না কিনে প্রতি ঈদে তার বাবা আর মা-কে পোশাক পাঠাতেন। উনার মা তখন ধীরে ধীরে চেঞ্জ হোন। কিন্তু কোন আমাদের অভিমানী সেই ভাইয়া আর কখনো বাড়ি ফিরে যান নি। সেই ভাইয়াই তাঁর সৎ-মায়ের জন্য কাঁদছেন। আমি আর কিছু না বলে চুপচাপ চলে এলাম।কি বলবো ! পরের দিন সকালে নাস্তা খেতে গিয়ে দেখি সেই পুরনো রূপে ভাইয়া। উনার সাথে যোগাযোগ নেই এখন,তবে যতটুকু জানি উনার কষ্টের দিনের অবসান হয়েছে এবং আল্লাহর রহমতে উনি খুব ভাল ক্যারিয়ার গড়ে তুলেছেন।

দুই, এবার আরেক বন্ধুর গল্প। তার একটা ছোট কথা মনে পড়লেই আমি মন খারাপ করে থাকতে পারি না-” তোমরা শুধু অযথা মন খারাপ করে থাকো। আর আমার বাবা আর মা পর পর দুই বছর মারা যান,আমার দুই ইয়ার পরীক্ষার সময়। আমার ভাইয়া-আপুয়া আমার খোঁজ নেয় কিন্তু তাদের তো নিজের পরিবার আছে।আমি যখন বাসায় যাই আমার জন্য কেউ খাবার সাজিয়ে রাখে না, আমি ঘুম থেকে দেরিতে উঠলে কেউ আমাকে ডেকে দেয় না,আমার জন্য নাশতাও রেডি থাকেনা। যখন কেউ থাকেনা তখন আমি আব্বু-আম্মুর ব্যবহার করা জিনিস গুলো বুকে জড়িয়ে ধরে নিরবে কাঁদি।”
তারপর আবার তার হাসি,”আরে বাদ দাও তো।আসো মুভি দেখি।।… “

এরকম মানুষগুলো জীবনযুদ্ধে হার মানে নি,এগিয়ে চলেছে। তাহলে আমাদের যাদের সব কিছু আছে তাদের মন খারাপ নামের বিলাসী রোগটা দূর করে ফেলাই কি উত্তম নয়?

হে পরম করুণাময়,তুমি আমাকে অনেক আনন্দে রেখেছো।শুধু মাঝের অস্থির সময়টুকু পার করার ধৈর্য আমাকে দাও। বাকিটুকু আমি লড়ে যেতে পারবো ইনশাল্লাহ।

ফেসবুক কমেন্টস

Reactions

0
0
0
0
0
0
Already reacted for this post.

প্রতিক্রিয়া