আনিসুল হক ছিলেন পারিবারিক মানুষ। তাঁর স্ত্রীর নাম রুবানা হক ।বর্তমানে তাঁর স্ত্রী মোহাম্মদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আনিসুল হক ছিলেন চার সন্তানের গর্বিত পিতা। তাঁর দুই মেয়ে ও দুই ছেলে। তানিশা ফারিয়ামান এবং অয়ানিক উমাইরা তাঁর মেয়েদের নাম। ছেলের নাম নাভিদুল হক । ছোট ছেলে শারাফ কবরে শায়িত আছেন। তাঁর পরিবারে বিভিন্ন ব্যক্তি সমাজের বিভিন্ন ভালো জায়গায় আছেন। তাঁর ছোট ভাই আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক বর্তমানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সেনা প্রধান হিসেবে আছেন। মৃত্যু মানুষের জীবনের অমোঘ সত্য। মৃত্যু থেকে কেও পালিয়ে বাঁচতে পারেনা। আনিসুল হক পারেন নি মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসতে ।
সপরিবারে যুক্তরাজ্যে ব্যক্তিগত সফরে যান মেয়র আনিসুল হক ২০১৭ সালের ২৯ জুলাই। সেখানেই তিনি অসুস্থ হয়ে পরেন। ১৩ আগস্ট তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ডাক্তার দের নিবিড় পর্যবেক্ষনে সনাক্ত করা হয় তাঁর মস্তিস্কের রক্তনালী প্রদাহের সমস্যা। এই রোগ কে বলা হয় সেরিব্রাল ভাস্কুলাইটিস।এর পর তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষন কেন্দ্রে রাখা হয়। ৩১ অক্টোবর তাঁর অবস্থার উন্নয়ন ঘটলে তাকে আইসিইউ(ICU) থেকে রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে(Rehabilitation centre) সরিয়ে নেওয়া হয়। আবার ২৮ নভেম্বর তাঁর অবস্থার অবনতি হয়। রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার (Rehabilitation centre)থেকে তাকে আবার আইসিইউ (ICU) তে সরিয়ে নেওয়া হয় । এর পরে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। দেশের মানুষ কায়মনোবাক্যে দোয়া করছিল নগরপিতার সুস্থতার জন্যে।
৩০ নভেম্বর, বাংলাদেশ সময় তখন রাত ১০.২৩ । চিকিৎসাধীন অবস্থায় লন্ডনের ওয়েলিংটন হাসপাতালে আনিসুল হকের মৃত্যু ঘটে। ২০১৭ সালের ২ ডিসেম্বর তাঁর জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয় আর্মি স্টেডিয়ামে । জানাজার পরে তাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়। এখানেই শায়িত আনিসুল হকের ছোট ছেলে শারাফ ও আনিসুল হকের মা। একজন মানুষের মৃত্যুর সাথে সাথে তাঁর স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় না। বেঁচে থাকা মানুষেরা ,যারা তাঁর স্বপ্নকে বুকে লালন করে , তাদের হাত ধরে এগিয়ে যায় স্বপ্নেরা । আনিসুল হক ছিলেন বাংলার সফল ব্যক্তিত্ব , একজন সফল অ জনপ্রিয় মানুষ। তাঁর বুকে লালিত ছিল সুন্দর ঢাকার,একটি সুন্দর দেশের স্বপ্ন। তিনি তাঁর স্বপ্ন পুরন করে যেতে পারেন নি। আমাদের দায়িত্ব তাঁর স্বপ্নকে আলোর মুখ দেখানোর জন্যে নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করা।