ভালবাসার গল্প (শেষ পর্ব)

Please log in or register to like posts.
পোস্ট

পঞ্চম দিন আবার দাঁড়ায়ে আছি তার অপেক্ষায়। প্রতি দিন যে সময় আসে সে সময় অতিবাহিত হয়ে গেছে। তবুও তার কোন খোজ নাই।তাই মনটা খারাফ হয়ে গেল।তবুও তার পথ পাণে চেয়ে আছি।হঠাৎ পিছু থেকে কে যেন বলে উঠলো,,কেমন আছেন? আপনি নিশ্চয় আমাকে খোজছেন? আমি আমতা অামতা করে বললাম,“না–মানে,আপনি তো গত কাল কিছু বললেন না।আমার উত্তর টা জানার জন্য দাঁড়ায়ে আছি। মেয়েটি হঠাৎ প্রশ্ন করল,

-কি করেন? 

-ঢাকা কলেজে পড়ি একাউন্টিং-এ। তুমি?

-ইডেন মহিলা কলেজে ইংলিশে পড়ি।

-বাই দ্যা ওয়ে, তোমার নাম টা কি বলা যাবে?

-আমি তিনা। আপনি?

-রিসাদ।চলুন না,কোথাও বসে চা খেতে খেতে গল্প করি।

-(কিছুক্ষন নিরব থেকে বলল) ওকে।

দুজন একটা চায়ের দোকান থেকে চা নিয়ে পুটপথের কিণারাই বসে পরি।

তিনা আবার জিঙ্গাসা করে,

-তোমার বাসাই কে কে আছে?

-বাবা আর মা।আমি তাদের এক মাত্র সন্তান। এবার তোমার কথা বল।

-মা ও আমার আদরে ছোট ভাই-বোন।

-তোমার বাবা?

-নাই।পাঁচ বছর হল মারা গিয়েছে।

(কথাটা শোনা মাত্রই মনটা খারাফ হয়ে গেল)

তিনা বলল,আগামী কাল তো ছুটি। তোমার বাবা-মা কে কী এখানে আনতে পারবে?

-হুম পারব। কিন্তু কেন?

-কাল আসলেই বোঝবে! আজ উঠি।

-তোমার ফোন নাম্বার টা দেও….

পরের দিন বাবা-মা কে সঙ্গে করে আসলাম। তিনাকে ফোন করলাম,,

-কোথাই তুমি?

-এই তো প্রায় চলে ‍এসেছি।

-ওকে…

তিনা একটা ভদ্র মহিলার সাথে রিক্সা থেকে নামলো। মহিলাকে দেখেই বোঝতে পারি ওনিই তিনার মা।

তিনা কাছে এসে বাবা-মাকে সালাম জানালো। সে তার মাকে পরিচয় করায়ে ‍ দিল।

এরপর আমরা সবাই এক টা রেস্ট্ররেন্ট-এ গিয়ে বসি। তারপর শুরু হয় কথোপকথোন–

-(তিনার মা শুরু করলেন) দেখুন,আমার মেয়েকে আমি অনেক কষ্টে মানুষ করছি।আমার মেয়েটা বর্তমান যুগের আর দশটা মেয়ের মত নয়।খুবই সরল-সোজা।সবকিছু সামনা-সামনি বলতে পছন্দ করে।তাই হয় তো আপনাদের আসতে বলেছে।

-না ঠিক আছে।

এবার তিনা বলতে শুরু করল….

-অ্যাংকেল,আপনাদের কি আমার পছন্দ হয়েছে? হ্যা অথবা না বললেই চলবে।

-হ্যা মা,তোমাকে আমার পছন্দ হয়েছে।

-হয় তো বা আপনারা অবাক হচ্ছেন, মেয়েটা এসব কি বলছে! কিন্তু সমাজের দিকে তাকালে এর উত্তর আপনি সহজেই পেয়ে যাবেন। ছেলে-মেয়ে প্রেম করে নিজেদের ইচ্ছা মতন বিয়ে করে।কিন্তু দোষটা পরোপরি মেয়েদের উপর চলে আসে।আর আমি চাই না, আমার উপরেও এমন টা হক।তাই আপনাদের ডাকা।এতে আপনারা্ ও আমরা দু পক্ষই খুশি হব। আপনার ছেলে যেমন আমাকে পছন্দ করেছে, আমিও তেমন আপনার ছেলেকে পছন্দ করেছি। আমি আপনার ছেলেকে বিয়ে করতে রাজি আসি। কিন্তু আমার একটা শর্ত আছে!

-কি শর্ত মা?

-আপনার ছেলেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে হবে এবং নিজে কর্ম করতে হবে।তারপরে আমি তাকে বিয়ে করবো। তার আগে নয়।

এবার অ্যাংকেল রিসাত কে জিঙ্গাসা করল,

-কী রে ,পারবি তো?

-ইনশাল্লাহ পারবো।

তখন থেকেই আমার জীবনটা সম্পূর্ণ পাল্টায়ে ‍গিয়েছে)।

নাস্তা করছি। হঠাৎ তিনা ফোন করে কান্না জড়িত কন্ঠে বলে,“মা যেন কেমন করছে।

-তুমি চিন্তা কর না। আমি এখনোই আসছি।

বাবা  জিঙ্গাসা করল, কি হয়েছে?

আমি সব বললাম।তারপর সবাই এক সাথে বের হলাম।

আমরা যত তারাতারি সম্ভব তিনাদের বাসাই পৌঁছায়। তিনা আমাদের দেখেই হাউ-মাউ করে কেঁদে ওঠে।আমাদের আর বোঝতে বাকি রইলো না। তিনার মা-ও মারা গিয়েছে।এই দৃশ্য দেখে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলাম না। নিজের অজানতেই যেন চোখ দিয়ে পানি ঝরতে শুরু করে। এই ঘটনার তিনদিন পরেই আমি তিনাকে বিয়ে করি।

>>>>এখানেই শেষ আমার ভালবাসার গল্প<<<<

ফেসবুক কমেন্টস

Reactions

0
0
0
0
0
0
Already reacted for this post.

প্রতিক্রিয়া