১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপ; বাংলাদেশের প্রথম বিশ্বকাপ। সেই বিশ্বকাপের ৩০ জনের প্রাথমিক দলে আসলো নিয়ামুর রশীদ রাহুলের মত নতুন মুখ কিন্তু দলে জায়গা মিললোনা তখন পর্যন্ত বাংলাদেশের পক্ষে সফলতম ব্যাটসম্যান আতাহার আলী (৭৮, ৮২ রানের দুটো ইনিংস ছিলো তার ক্যারিয়ারে। ম্যান অব দ্যা ম্যাচ ও হয়েছিলেন একবার।), হাবীবুল বাশার সুমন আর (আকরাম-বুলবুল-নান্নু ট্রায়োখ্যাত) মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর। নান্নুর তখন পর্যন্ত তেমন কোন আন্তর্জাতিক সাফল্য না থাকলেও লীগ ক্রিকেটে সে ছিলো অন্যতম সফল মুখ ও সে সুবাদে জাতীয় দলের নিয়মিত খেলোয়াড়। দেশের হয়ে প্রথম বিশ্বকাপ দলে চান্স না পাওয়া আতাহার প্রতিক্রিয়ায় বলেছিলেন, “মন চাইছিলো ট্রাকের নিচে ঝাপ দি!” (যদিও তার আগের সিরিজের একটা ম্যাচে কেনিয়ার সাথে ২২ বল খেলে শূণ্য রানে আউট হয়েছিলেন আতাহার)। সেবার আতাহার চান্স না পেলেও সাংবাদিক ও জনগণের প্রবল দাবীর মুখে এবং যেহেতু নান্নু ছিলেন শহীদ পরিবারের সন্তান সে বিবেচনায় সাবের হোসেন চৌধুরীর আনুকূল্যে শেষমেষ দলে জায়গা পেয়েছিলেন নান্নু। সেই বিশ্বকাপে আমাদের একমাত্র প্রত্যাশা ছিলো স্কটল্যান্ডকে হারানো। এডিনবার্গে কনকনে ঠান্ডা আবহাওয়ার সে ম্যাচে যখন বিশ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ ধুঁকছিলো তখন নাইমুর রহমান দূর্জয় ও লো অর্ডার ব্যাটসম্যানদের সাথে জুটি বেঁধে ৬৮ রানের অপরাজিত এক ইনিংস খেলে ম্যাচটা বের করে এনেছিলেন নান্নু। যেটুকু মনে পড়ে সেদিন বল হাতেও উইকেট পেয়েছিলেন নান্নু। ম্যান অব দ্যা ম্যাচ নান্নু পুরষ্কার হিসেবে পাওয়া শ্যাম্পেনের বোতলটা উঁচিয়ে ধরে বুকটা ভরে দিয়েছিলেন। অথচ জনগণের আস্থার প্রতিদান নান্নু কোনদিনই দিতে পারতেন না যদিনা নির্বাচক বা বোর্ড তাকে শেষ পর্যন্ত বিবেচনা না করতো। আজ ১৯ বছর পর নান্নু এখন জাতীয় দলের নির্বাচক। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে অনেক শিহরণ জাগানিয়া মূহুর্ত উপহার দেয়া এক ক্রিকেটার মোহাম্মদ আশরাফুল তার ভুলের প্রায়শ্চিত্ত শেষ করে জাতীয় দলে ফিরতে উন্মুখ। অথচ নান্নু সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন আশরাফুলকে দলে ফেরানোর কোন ইচ্ছাই তাদের নেই। পারফর্ম করে নিজেকে প্রমাণ করতে না পারলে এমনিতেও আশরাফুল ফিরতে পারবেন না। কিন্তু এতটা র্যুড না হলেও পারতেন নান্নু!
আশরাফুলের ক্রিকেটিও জীবনের উত্থান-পতনের গল্প

ফেসবুক কমেন্টস