জাতীয় অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাকঃ চলমান বিশ্বকোষ ও জ্ঞানতাপস
চলমান বিশ্বকোষ জাতীয় অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক। তাঁর সম্পর্কে পড়ে এ কথাটাই মনে হয়েছে প্রথমে। যাকে নিয়ে লিখার আগে ভাবতে হয়েছে বেশ কয়েকবার। এমন একজন মানুষকে নিয়ে লিখতে গেলে তাঁর সম্পর্কে বিশদ ভাবে জানা চাই, আবার এও সত্য বিশদ ভাবে জেনে যাওয়ার ব্যাপারটা সহজ নয়। এ ব্যাপারে তাই আমার দারস্থ হতে হয়েছে বিভিন্ন কেতাবের। বিশেষ ভাবে বলতে হয় জাতীয় অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক এর গুণগ্রাহী আহমদ ছফার বই ” যদ্যপি আমার গুরু” বইটির কথা। এই বইটি পরে রাজ্জাক স্যার কে অনেকটা কাছের থেকে বুঝার সুযোগ হয়েছে। অনেকের মতে তিনি অনেক রকম হবেন, তবে এ কথা বলতে বাধা নেই তাঁর জ্ঞানের পরিধি নিয়ে ধারনা সবার ক্ষেত্রেই এক।
১৯১৪ সালে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার পাড়াগ্রামে জন্মগ্রহন করেন জাতীয় অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক। ঢাকার মুসলিম সরকারী উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকা কলেজু থেকে উচ্চমাধ্যমইক পাশ করেন তিনি। তিনি ছিলেন আলোর প্রতীক । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দিলেও তিনি পরবর্তিতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর ঐ বিভাগে যোগ দেন।
জ্ঞান আহরণে তাঁর জুড়ি মেলা ভার আর জ্ঞান বিতরনেও তিনি সিদ্ধহস্ত। ধর্ম,সমাজ,রাষ্ট্র নিয়ে চিন্তা ,যুক্তি ও ইতিহাস নির্ভর কথাগুলোর যদি সত্যিকার অর্থে কোন রেকর্ড রাখা যেত হয়ত দেশের জন্য সেটা হত অন্যধরনের এক আশীর্বাদ। দেশের অনেক স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গ তাঁর সান্নিধ্যে এসেছিলেন, এদের অনেকেই এখনো বেঁচে আছেন, আবার অনেকেই পরবর্তিতে হয়েছিলেন আলোচিত। আবদুর রাজ্জাক ছিলেন জ্ঞান তাপস।সারল্যে তাঁর মুক্তি এবং ভক্তি । বাহ্যিক পৃথিবীর ব্যপারে ছিলেন অল্পতে তুষ্ট। তাঁর ঘরে গেলেই হয়ত বা গুণগ্রাহী বা বন্ধুদের চোখে পড়ত থরে-বিথরে সাজানো বই। শোয়া যায় এমন চৌকি। যেখানে থাকার বাহুল্য নেই আছে জ্ঞানের ভান্ডার। আর সেই ভান্ডার থেকে মুক্তা আহরণ করে চলেছেন একজন প্রবীন,বুদ্ধিদীপ্ত মানুষ।
আহমদ ছফা তাঁর গ্রন্থ “যদ্যপি আমার গুরু” তে অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক এর ঘরে তাঁর সাথে দেখা হয়ার সময়টাকে কলমের আঁচড়ে করে তুলেছেন জীবন্ত। সেখান থেকেই একটা উদ্ধৃতি সবার সুবিধার জন্য এখানে দিলাম—
“ঘরটি পরিসরে বিশেষ বড় নয়। চারদিক বই পুস্তকে ঠাসা। ঘরটিতে একমাত্র খাট , না , খাট বলা ঠিক হবেনা চৌকি । সামনে একটা ছোট টেবিল। চৌকিটির আবার একটি পায়া নেই। সেই জায়গায় বইয়ের উপর বই রেখে ফাকটুকু ভরাট করা হয়েছে। চমৎকার ব্যবস্থা।পুরোনো বইপত্রের আলাদা একটা গন্ধ আছে। আমি সেই বই পত্রের জঞ্জালে হতবিহবল হয়ে দাঁড়িয়ে আছি। এই ঘরে যে কোন মানুষ আছে তা প্রথমে খেয়ালই করিনি। হঠাৎ চৌকির উপর একটা মানুষ ঘুমিয়ে আছে। একখানা পাতলা কাঁথা সেই মানুষটার নাক অবধি টেনে দেওয়া। চোখ দুটি বোজা। মাথার চুল কাঁচাপাকা । অনুমানে বুঝে নিলাম, ইনিই প্রফেসর রাজ্জাক। ঘরে দ্বিতীয় একজন মানুষের আবির্ভাব ঘটেছে খাটেশোয়া মানুষটি কী করে বুঝে গেলেন।
তিনি নাখ মুখ থেকে কাঁথাটি সরিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, কেডা?
আমি চৌকির একেবারে কাছটিতে গিয়ে সালাম দিলাম এবং নাম বললাম।
তিনি ঘুম-জড়ানো স্বরেই জানতে চাইলেন , আইছেন ক্যান হেডা কন ”
——যদ্যপি আমার গুরু( আহমদ ছফা )
এই পর্যন্ত পড়েই আমি অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক সম্পর্কে আরো কৌতুহলি হয়ে উঠলাম। তিনি ভাষা নিয়ে এতটা জটিলতা করেননা, যতটা আমরা চাই। সমাজ বুঝে আমরা ভাষার শুদ্ধতার দিকে জোড় দিতে গিয়ে হয়ত মাঝে মাঝেই জ্ঞানের শুদ্ধতা হারিয়ে ফেলি। এই জায়গাটা আমার বেশ মনে ধরল। তীব্র ক্ষুরধার মেধা, তীক্ষ্ণ চোখের দৃষ্টি , বুক কাপিয়ে দেয় জানা-অজানার আর কৌতুহলে ভরিয়ে দেয় মনের অজানা প্রকোষ্ঠ।
রাজ্জাক স্যারের জীবন নিয়ে বিশদ লিখার ক্ষমতা আমার নেই। তাঁর অভ্যাস, রীতিনীতি সমর্কে জা জেনেছি তাঁর সংক্ষেপ আলোচনাই আমার উদ্দ্যেশ্য। অভ্যাস এর কথা বলতেই মনে পড়লো তাঁর সাধারন পাঞ্জাবি,লুঙ্গির কথা। আর কল্কির তামাকে ধোঁয়া উড়াবার কথা। সে কথাও অবশ্য আমি বইয়েই জেনেছি। আর কিছু পড়েছিলাম সবটুকু মনে নেই।
বই পড়া সম্পর্কে জাতীয় অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাকের ধারনা অন্যরকম। শুধু পড়লেই হবেনা এর জরুরি অংশ খাতায় বা নোটবুকে টুকে রাখা দরকার। এ প্রসঙ্গে তিনি আহমদ ছফাকে একদা বলেছিলেন-
ক্ষেত চষবার সময় জমির আইল বাইন্ধ্যা রাখতে অয়।
তিনি নিজে জ্ঞানের সাগরে ডুব দিতেন, আর মাঝে মাঝেই সে সাগরে অন্যদেরও ডুবিয়ে দিতেন। একবার তো আবদুর রাজ্জাকের কথায় আহমদ ছফা লেনিনের ইকোনোমিক হিস্ট্রি অব রাশিয়া বইটি পড়ে পড়ে প্রতিটি অধ্যায়ের জন্য আলাদা সারসংক্ষেপ তৈরি করেছিলেন। আবদুর রাজ্জাক নিজে বই এর ভান্ডারে নিজেকে হারাতেন আর অন্যদের ও সে রাস্তা দেখিয়ে দিতেন । তিনি প্রচুর জানতেন প্রচুর পড়তেন কিন্তু লিখেছেন কম। কিন্তু কেন তিনি এত কম লিখেছেন এটা নিয়ে হয়ত বহুমত প্রচলিত। এটা সবার কাছে রহস্য হলেও রাজ্জাক স্যারের কাছে হয়ত এটা সাদামাটা একটা ব্যপার ছিলো। অনেকেই লিখে যতটা না মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছেন তিনি হয়ত তাঁর মুখের বুলিতেই তাঁর দ্বিগুণ করেছেন। তিনি ইচ্ছে করেই বলতেন বা অনুপ্রাণিত করতেন এমন হয়ত নয়। তবে তাঁর কথার মাঝে হয়ত সবাই এমন সব জিনিশ খুজে পেত যা অমূল্য। তিনি নিজে বেশি না লিখলেও, অন্যদের উৎসাহে ভাটা দেন নি বরং উৎসাহ দিয়েছেন। তিনি হয়ত এসবের উপরেই ছিলেন । নিজের লিখেন নি, কিন্তু লিখার জন্য মানুষ তৈরি করেছেন। তিনি হয়ত হাজারটা বই লিখেন নি। কিন্তু তাঁর জীবন টাই তো একটা জ্ঞান অন্বেষণের গল্প। তিনি রেখে গিয়েছেন নিজের জীবনের গল্প আমাদের জন্য।
ইতিহাসের অধ্যাপক, অর্থনীতির অধ্যাপক অনেকেই আসতেন এই জ্ঞানভাণ্ডারের কাছে। হয়ত কিছু জানার জন্য অথবা শুধু মুগ্ধ হয়ার জন্যই তারা আসতেন। অনেকেই স্যারের কাছে আসতেন নানাবিধ ফায়-ফরমায়েশ নিয়ে। কেউ নিজের চাকরী ক্ষেত্রে তদারকির জন্য,কেউ আপন জনের পদের উন্নতির জন্য। আবদুর রাজ্জাক অনেকভাবেই তাদের সাহায্য করতেন । আর আহমদ ছফা তো তাঁর গুরুর কাছ থেকে নিয়মিত বিপদে -আপদে নির্দিধায় টাকা চেয়ে নিতেন। বলতেন আমার অমুকদিন অত টাকা লাগবে।
বোলে রাখা ভালো বাংলার অন্যতম সেরা দাবাড়ু নিয়াজ মোরশেদের সাথে কিন্তু জাতীয় অধ্যাপক রাজ্জাক স্যারের সখ্যতা ছিল বেশ ভালো। বই এর সাগরে বসে মাঝে মাঝে সেকালের কম বয়সি দাবাড়ু নিয়াজ মোরশেদের সাথে চলত তাঁর দাবা খেলা। আর বই এর কি বাহার! সমাজবিজ্ঞান,রাজনীতি ,ইতিহাস, রাষ্ট্রতত্ত্ব কি নেই সেখানে। তাঁর বই এর সংগ্রহে আরো আছে বালজাকের রচনাবলী, মোপাসার রচনা, ফ্লবেয়ারের উপন্যাস, ভিক্টর হুগোর বই। বিভিন্ন জ্ঞানী লোকদের সম্পর্কে তাঁর ছিল উচ্চ ধারনা। অনেক কেই দেখেছেন কাছ থেকে। নজ্রুল সম্পর্কে বলতেন বৈষ্ণব কবিদের পরে কোন গীতিকারই নজ্রুলের মত জনচিত্তে অমন আসল লাভ করতে পারেনি।
আবদুর রাজ্জাক স্যারের ছিল বুদ্ধিদীপ্ত মানুষের এবং সৃষ্টিশীল মানুষের ওঠাবসা। জয়নুল আবেদীন, জসীম উদ্দীন, কবি মোহিতলাল এদের সবার সাথে ছিল তাঁর নিবিড় পরিচয়। সেই প্রসঙ্গে আহমদ ছফার গ্রন্থ, যদ্দপি আমার গুরু” তে লেখার একটি ক্ষুদ্র অংশ আমি পাঠকদের জন্য উদ্ধৃতি দেওয়ার লোভ সামলাতে পারছিনা। লেখাটি ছিলো এরুপ-
“…তিনি হুঁকো টানতে টানতে জসীমুদ্দীনের গল্প বলতে আরম্ভ করলেন। একসময় আমি এবং জসীমুদ্দীন এক বাড়িতে থাকতাম । একদিন জসীমুদ্দীন আমাকে কাপড়চোপড় পইর্যা তাড়াতড়ি তৈয়ার অইবার তাগাদা দিতে লাগলেন। আমি জিগাইলাম, কই যাইবার চান। জসীমুদ্দীন কইলেন, এক জায়গায় যাওন লাগব। কাপড়চোপড় পইর্যা তাঁর লগে হাইট্যা হাইট্যা যখন এস্প্ল্যানেড আইলাম , জসীমুদ্দীন ঘাড় চুলকাইয়া কইলেন , কও দেখি এখন কই যাওয়া যায়? এইরকম কান্ড অনেকবার অইছে। একটুখানি হাসলেন।
কবি জসীমুদ্দীনের প্রসঙ্গ ধরে কবি মোহিতলালের কথা উঠলো। মোহিতলাল মজুমদার পূর্ববাংলার উচ্চারন রীতিটি বরদাশত করতে পারতেন না। কবি জসীমুদ্দীনের একটি কবিতার বই এর নাম ছিল “ধান খেত”। মোহিতবাবু ব্যঙ্গ্য করে বলতেন জসীমুদ্দীন ধান খেত । মোহিতলালাএর জিভের মধ্যে বিষ আছিল। তাঁর ঠাট্টা রসিকতা এমন ভাবে ছড়াইয়া পড়ল জসীমুদ্দীন বেচারার জান যাওনের দশা । একদিন আমি মোহিত বাবুরে চ্যালেঞ্জ কইরা কইলাম, আপনি জসীমুদ্দীনরে এত ঠাট্টা করেন ক্যান। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে যদি জসীমুদ্দীনের উপর এক অধ্যায় লেখা অয় , আপনেরে নিয়া লিখব মাত্র চাইর লাইন। এরপর রাজ্জাক সাহেব একটি সাম্প্রতিক বিষয়ের অবতারনা করলেন। দ্যাহেন বাংলাদেশ সরকার জসীমুদ্দীনরে কিছু করলোনা। আমারে আর জয়নুল আবেদিন সাহেবরে মুশকিলে ফেলাইয়া দিছে। আমাগো দুইজনরে ন্যাশনাল প্রফেসর বানাইছে , আর জসীমুদ্দীনরে কিছু বানাই নাই।
যদ্যপি আমার গুরু( আহমদ ছফা )
১৯৭৫ সালের কথা। সে সময় বাংলাদেশ সরকার প্রফেসর আবদুর রাজ্জাক কে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেন এবং তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর নেন। যুদ্ধের পরের কথা এসব। দেশ স্বাধীন হয় সেই ৭১ এ। ৭২ সালের দিকে । বাড়ি বদল করে তখন তিনি অন্যত্র থাকেন। প্রফেসর রাজ্জাকের সাথে ছিলো ছোট ভাই আর তাঁর স্ত্রী এবং তাদের ছেলে-মেয়ে। একময় দিল্লির বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পান ডিলিট উপাধি। রাজ্জাক সাহেবের পছন্দের তালিকায় মানুষের সংখ্যা নিতান্তই কন নয়। আছেন ড. কামাল , বদরুদ্দীন উমর, ড. আনিসুজ্জামান, ড. রওনক জাহান , সরদার ফজলুল করিম, ড. সালাউদ্দীন আহমেদ, ড. মোশাররফ হোসেন, ড. মমতাজুর রহমান তরফদার এবং আরো অনেকেই।
৮৫ বছর বয়সে ২৮ নভেম্বর, ১৯৯৯ সালে এই জ্ঞান্তাপসের জীবনের সমাপ্তি হয়। আমি বার বার ভাবতে বাধ্য হচ্ছি একজন চলমান বিশ্বকোষ , জ্ঞানের রত্ন ভান্ডার কেন কিছু লিখে গেলেন না। উত্তরটাও সামনেই আছে, প্রভাবিত করার জন্য শুধু লিখেই যেতে হবে এমনটা নয়। অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক তাঁর জ্ঞান স্পৃহা ছড়িয়ে দিয়েছেন লাখো তরুনের অন্তরে। শুধু তাঁর সংস্পর্শে এসেই অনেকেই পরবর্তিতে জ্ঞানের পথে হেটেছেন বহুদুর। একজন মানুষ আর চিন্তা চেতনার ছাপ যুগের পর যুগে ছড়িয়ে দিয়েছেন শুধুই তাঁর কথা আর সংস্পর্শের মাধ্যমে। ভাবতেই অবাক লাগে। তাঁর সম্পর্কে এখানে আরেকটি কথা না বলে পারছিনা।অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক হ্যারল্ড লাস্কির অধীনে পিএইচডি করার জন্য লন্ডন গমণ করেন। কিন্তু হ্যারল্ড লাস্কির মৃত্যুর পর, নিজের তৈরি থিসিসি এর যথাযথ মূল্যায়ন করার মত আর কেউ নেই , এই চিন্তায় অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক পিএইচডি সম্পন্ন না করেই(থিসিস জমা না দিয়েই) দেশে ফিরে আসেন। তিনি আদতেই জ্ঞানের অনুসারী ছিলেন, কাগুজে সার্টিফিকেটের নয়।আমাদের জাতীয় অধ্যাপক রাজ্জাক স্যার ছিলেন জ্ঞানের প্রতীক ।
অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক লিখেন নি খুব বেশি , তবে তাকে নিয়ে লিখতে গিয়ে, যারা এপর্যন্ত লিখেছেন মনে হয়না লিখে শেষ করতে পেরেছেন। তিনি লিখবেন কি! তিনি তো ছিলেন নিজেই একটি চলমান বিশ্বকোষ । জ্ঞানের রত্নভান্ডার। তাঁর জীবন নিয়ে আরো গভীর আলোচনাই পারে সেই রত্নভান্ডার এর দ্বার সকলের সামনে উন্মোচিত করতে। তিনি নিজে লিখেন নি, তবে অনেককেই উদ্বুদ্ধ করেছেন লিখতে। শেষপর্যন্ত আমার মনে হয়েছে, তিনি তাঁর অনুসারীদের মাধ্যমেই তাঁর চিন্তার বিস্তার ঘটিয়েছেন। তাদের লেখার মধ্যেই বেঁচে থাকবেন অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক, বেঁচে থাকবে তাঁর জ্ঞান সাধনা আর চিন্তাচেতনা। অনেক অনেক বই এ হয়ত তাঁর নাম লিখা থাকবেনা। কিন্তু সেসময় এবং পরবর্তির অনেক বই এর লাইনে লাইনে, জ্ঞানের ধাপে ধাপে লুকিয়ে আছে আবদুর রাজ্জাকের অস্তিত্ব । তিনি খুব কথা বলতেন পরিচিতদের সাথে। বলাই বাহুল্য এর মধ্যে অধিকাংশই তখনকার এবং এখনের জ্ঞানী গুনী। তাদের মাধ্যমে তিনি রেখে গেছেন তাঁর জ্ঞান ভান্ডার। বই এ তাঁর নাম নাইবা থাকলো। তিনি হয়ত বুঝতে পেরেছিলেন জ্ঞান ই আসল, নাম নয়। নাহলে নিজের ধারনা কাউকে না বলে লিখে রাখলেই লিখে ফেলতে পারতেন বই এর পর বই। অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক জ্ঞান কে প্রাধান্য দিয়েছেন নিজের নাম কে নয়।
তথ্য সূত্রঃ যদ্দপি আমার গুরু ( আহমদ ছফা )
উইকিপিডিয়া bn and en
অন্যান্য লেখনী পড়তে ক্লিক করুনঃ
তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেটের স্থপতি