হাইস্কুলের আটের সিঁড়ি

Please log in or register to like posts.
পোস্ট
RSP
                                                                       এক
হাইস্কুল জীবন এমন একটি সময় যা কখনো ভোলার নয়। আমার হাইস্কুলের জীবনে যেসব বন্ধু জুটেছিলো তাদের অনেকে আজো আমার সাথেই রয়েছে। ক্লাস সিক্স থেকে এইট এর কথা বাদ দিলাম, কেননা এইট পর্যন্ত বিশেষ কোন স্মৃতি নেই।আমার আগের লেখায় বলেছি আমি ইন্টার পর্যন্ত অনেক পিচ্চি ছিলাম। বরাবরই পিচ্চি হবার কারণে আমি সবার সাথে মিশতাম না,ছোট মনে হতো। তাই ক্লাসে কোনে বসে থাকতাম। একটি ঘটনা খুব মনে পড়ে—– তখন আমি ক্লাস এইটে, আমাদের ক্লাসে দুইটা দরজা ছিলো, সামনে দিয়ে গিয়ে অন্য ক্লাসে যাওয়া যেত। সামনের দরজায় সব ছেলেরা দাঁড়িয়ে থাকতো। কেননা অন্য ক্লাসের সুন্দরী ললনাদেরকে দেখা যেত। পাঠক, আমার কথা ভাবার কোন প্রয়োজন নেই, কেননা লম্বা গুলোর সামনে পেছনে দাঁড়ানোর সাহস ছিলোনা বৈকি দাঁড়াতাম না। সেদিন ছিলো বুধবার, দরজার সামনে সবাই দাঁড়িয়ে ললনাদের কে চাক্ষুষ করছে। আর আমি ক্লাসে বসে আছি। হঠাৎ ঘন্টা পড়ে গেলো। সামনে দিয়ে ইংরেজি স্যার আসছেন,স্যার একটু রাগী ধরনের তাই সবাই হুরমুড়িয়ে পেছন ঘুড়ে মারলো দৌড়! এদিকে পেছনে আসছিলেন আমাদের আরেক মধ্যবয়সী চশমাওয়ালা স্যার। সংগত কারণে তার নাম লিখলাম না। হঠাৎ ছাত্ররা দৌড়াতে গিয়ে স্যার এবং ছাত্রের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়ে গেলো। এতে করে স্যার একটু দূরে গিয়ে ছিটকে পড়লেন। আমি আর দুইজন সহ ধরাধরি করে টেনে স্যারকে কোনমতে তুললাম। এরপর স্যার চেয়ারে বসে দুই মিনিট খানেক চুপ থাকলেন। সেই মুহুর্তে স্যারের প্রথম প্রশ্ন ছিলো ” আমার চশমা কই?” কেউ খেয়াল করেনি যে যারা স্যারকে টেনে তুলেছিলাম তাদের একজনের পায়ের তলায় স্যারের চশমা নিহত হয়েছে। স্যার আমাদের মধ্যে একজনকে কষে একখান থাপ্পর মেরে ক্লাশ থেকে বেরিয়ে গেলেন। আমরা দাঁতে হাত চেপে দাঁড়িয়ে রইলাম।
                                                                          দুই
. ক্লাসের মধ্যে পিচ্চি বলে অনেকে ধরে মারতো,কান টানতো। বাশার আমাদের বন্ধুদের মধ্যে বিগবস ছিলো।তার দলের সামনে কেউ দাঁড়াতাম না। এক দিন টিফিনের পর মাথাব্যাথার কারনে চুপটি মেরে আছি,এমন সময় বাশার এসে আমার মাথায় থাবা মেরে আমাকে কাঁদিয়ে দিলো।কাঁদতে কাঁদতে আমার মেজাজ গরম হয়ে গেলো। বাশারকে হ্যাচকা মেরে ফেলে দিলাম। তার বুকের উপরে চেপে বসে কিল চাপড় মেরে বললাম বিগবসের এ আবস্থা! আজো এই ঘটনা বাশারের সাথে শেয়ার হলে হাসাহাসি হয়। আমাদের ক্লাস এইটে প্রথম সাময়িক পরিক্ষায় একবার ইংরেজিতে ৩১ পেলাম। কিন্তু বারবার গুনেও ৩৩ হচ্ছে। স্যার বিরক্ত হয়ে সবার সামনে এক এক করে নম্বর গোনালেন! শেষমেশ ৩১ নম্বরই হলো! সেদিন সবার সামনে ৩১ বার কান ধরে উঠবস করতে হয়েছিলো! আর মনে মনে তওবা করে বললাম ” কোনদিন স্যারের খাতার নম্বর গুনবো না”। যাহোক, বার্ষিক পরিক্ষায় ভালো ফল করেই নাইনে উঠেছিলাম।
(আসছে হাইস্কুলের নয়ের সিঁড়ি) ———————————————– লেখকঃ সাঈদ আল রবি                                                                                                               রচনাকালঃ ২২শে জানুয়ারি ২০১৯।

 

ফেসবুক কমেন্টস

Reactions

0
0
0
0
0
0
Already reacted for this post.

প্রতিক্রিয়া