তৎকালীন মুসলিম সমাজব্যবস্থা মেয়েদের জন্য অনুকূল ছিলনা মোটেই।সে সময়ের সমাজ ব্যাবস্তা অনুসারে রোকেয়া ও তাঁর বোনদের বাইরে পড়াশোনা করতে পাঠানো হয় নি।তবে তাদেরকে ঘরে আরবি ও উর্দু শেখানোর ব্যাবস্থা করা হয়। তবে রোকেয়ার বড় ভাই ইব্রাহীম সাবের ছিলেন আধুনিক ধ্যানধারনার। মূলত তার প্রচেষ্টাতেই বেগম রোকেয়ার শিক্ষা এগিয়ে চলে।তিনি রোকেয়া ও করিমুন্নেসাকে ঘরেই গোপনে বাংলা ও ইংরেজি শেখানোর ব্যবস্থা করেন।তার হাতেই রচিত হয়েছিল বেগম রোকেয়ার শিক্ষার প্রাথমিক সোপান।
বেগম রোকেয়ার শিক্ষার জন্য যে ভালোবাস আর একাগ্রতা ছিল সে সম্পর্কে যথার্থ বলেছেন।যোগেন্দ্রনাথ রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন সম্পর্কে বঙ্গের মহিলা কবি গ্রন্থে লিখেছেন,
“বঙ্গের মহিলা কবিদের মধ্যে মিসেস আর,এস, হোসায়েনের নাম স্মরণীয়। বাঙ্গালাদেশের মুসলমান-নারী-প্রগতির ইতিহাস-লেখক এই নামটিকে কখনো ভুলিতে পারিবেন না। রোকেয়ার জ্ঞানপিপাসা ছিল অসীম। গভীর রাত্রিতে সকলে ঘুমাইলে চুপি চুপি বিছানা ছাড়িয়া বালিকা মোমবাতির আলোকে জ্যেষ্ঠ ভ্রাতার কাছে ইংরাজী ও বাংলায় পাঠ গ্রহণ করিতেন। পদে পদে গঞ্জনা সহিয়াও এভাবে দিনের পর দিন তাঁহার শিক্ষার দ্রুত উন্নতি হইতে লাগিল। কতখানি আগ্রহ ও একাগ্রতা থাকিলে মানুষ শিক্ষার জন্য এরূপ কঠোর সাধনা করিতে পারে তাহা ভাবিবার বিষয়।”
আসলেই, যার জ্ঞানের জন্য এমন সাধনা,শত সহস্র বাধা তার পথ আটকে রাখতে পারেনা।পারেনি সমসাময়িক সমাজ ব্যবস্থা বেগম রোকেয়া কে রুখতে। তাঁর জীবনের গল্প টা শত বছর পরেও প্রেরনা জোগাবে সুবিধা বঞ্চিত দের।
তাঁর জীবনের গল্পটা অন্য রকমের হতেও পারত। হয়ত তিনি আজকে যে বেগম রোকেয়া নামে পরিচিত, সে পরিচয় বা সম্মান তিনি পেতেন না। হ্যা হতে পারত যদিনা তাঁর বিয়ে সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের না সাথে না হত। এর কারন টাও যথার্থ। আসুন জানি!
