মজিদ সাহেব এর রহস্যময় জীবন:পর্ব ১

Please log in or register to like posts.
পোস্ট
মজিদ_সাহেব, রহস্য,রহস্যময়, জীবন

কি বার মনে নেই, কয় তারিখ তাও মনে নেই ,মনে থাকার কথাও নয় । এক ঘন্টা আগে কার সাথে কথা বললে তার বলা কথা আর নাম মনে থাকে শুধু মনে থাকেনা তার চেহারাটা!  সেই আমি ঘটনার দিন তারিখ হিসেব রাখবো এটা ভাবাটাই আমার জন্য একটা বিরাট সাহসের কাজ বটে।

 

হিমেলের সাথে হাটছিলাম। যাচ্ছিলাম আসিফ ভাইয়ের বাসায় সেখানে দরবারের একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন চলছে। কিছুক্ষন হাটার পরেই একটা রিকশা ডেকে উঠে পড়লাম। ভঙ্গুর রাস্তা দিয়ে ঝাকানি আর নাকানি-চুবানী খাইয়ে রিকশাওয়ালা ভাই আমাদের গন্তব্যে পৌছে দিলে হাড্ডি-গোস্ত-সমেত। আসিফ ভাইদের বাসা ২য় তলায়। তবে সহস্র না হলেও শতবার যাওয়ার পরেও আমি কার বাসা কত তলায় এটা ভুলেই যাই। কার বাসার মধ্যে আমার নিজের বাসাটাই বাদ কারন সেটা নীচ তলায়। যাক হিমেল উঠলো,পিছে আমি , পৌছে গেলাম সেজয়াব্বুর বাসায় তথা আসিফ ভাইয়ের বাসায়।

 

সেখানে জলযোগ সম্পন্ন করে ২৫ কেজির চালের বস্তা নিয়ে যেখানে আয়োজন হবে খাবারের সেখানে রওয়ানা দিলাম আমি আর হিমেল ।  রিক্সায় আবার পথ মেপে চললাম। সামনে কোরবানীর ঈদ। বিবির হাট গরুর বাজার পার হয়ে নামলা ত্রি-চক্রযান থেকে। বাকিটা হেটেই যেতে হবে। পালোয়ান হিমেল কাধে তুলে নিলো ২৫ কেজির বস্তা। কানে হেডফোন লাগিয়ে , কাধে বস্তা নিয়ে হিমেল হেটে চলল দুলকি চালে। আমি পিছে চললাম । কেউ যখন বোঝা নিতে চায় তখন তাকে নিতে দিতে হয় বৈকি!

 

পৌছে  গেলাম ডেস্টিনেশানে। শুরু হয়ে গেলো হালকা চালে বৃষ্টি। যে কেউ বলতে পারে আমার জীবনের গল্পে বৃষ্টি একটি কমন ব্যাপার। নিজের পক্ষে সাফাই আমি গাইবোনা, তবে এটুকু বলতে পারি বৃষ্টি আমার অধিক প্রিয় একটি প্রাকৃতিক বিসর্জন। এর সাথে আমার প্রায় দেখা হয়। এ পথে নামলেই আমি পথে নেমে যসটি

 

যাক সেখানে পৌছেই হিমেলের চোখে মুখে বিশেষ তাড়া লক্ষ্য করলাম। সে এখনি চলে যেতে চায়। জোর করে বসিয়ে রেখে ফায়দা নেই, তাই তাকে বিদায় জানিয়ে আমি একা ঢুকে গেলাম দরবারের খাবারের আয়োজন স্থলে। একপাশে রান্না চলছে। দুপুর বারোটা বাজে, কিন্তু ধোয়া ওঠা ডেকচি দেখেই আমার কেন জানি ক্ষিদে পেয়ে গেলো। অনাহূত একজন ক্ষিদার কথা বললে কেমনব যেন শুনায় ,তাই ক্ষিদা চেপে আমি নির্বিকার থাকার চেষ্টা করলাম।

 

একটু দূরে একটা বসার জায়গা দেখে সেখানে বসতে গেলাম। সেখানে আগে থেকেই অবশ্য আরো একজন আসীন। হাটুর উপর মাথা দিয়ে লোকটা বসে আছে। ঘাতালাম না, পাশের জায়গায় আস্তে করে লোকটার ধ্যান না ভাঙ্গিয়ে বসে পড়লাম । এভাবে কতক্ষন বসে ছিলাম জানিনা, হয়ত কেউ পাশে বসে ঝুমুলে নিজেরো ঝিমুনি আসে। তাই আমিও ঝিমুতে লাগলাম।

 

কতক্ষন পরে জানিনা আমার তন্দ্রা বিদায় নিলো। পাশের কোনব মসজিদে  আজান পড়লো। সত্য বই মিথ্যা বলিবোনা নামাজ বরাবর পড়তে চাইলেও মাঝে-সাঝেই মিস হয়ে যায় এক দু ওয়াক্ত। আজকে ঝটপট উঠে পড়লাম ,পাশে বসা ধ্যানে মগ্ন ব্যাক্তিকে জিজ্ঞেস করলাম ,”ভাই মসজিদ টা কোনদিকে?’

 

পাশে বসা লোকটা ঝট করে মাথা চোখ পাকিয়ে হাত নাড়িয়ে আমাকে ইঙ্গিতে যা বলল, তার যদি ভাষায় অনূবাদ হয় তবে হয়ত  অনেকটা এমন হবে”ধূর মিয়া ধ্যানের মধ্যে বিরক্ত করেন ক্যা?কাজ নাই? যান যান ত্যাক্ত করবেন না তো”

 

আমি নির্বোধের মত কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে দাড়ীয়ে চিন্তা করলাম কিছু বলব ইনাকে?

আবার কেনো জানি চিন্তা করলাম কিছু বলবনা। লোকটার চোখ দেখে আমার কেমন জানি একতা অনুভূতি হলো। আমি পাশে বসে পড়লাম আবার ।

 

নামাজে আর যাওয়া হলোনা। মনে মনে কথাটা খচ-খচ করছিলো। এমন সময় সামনের অফিস টাইপের কক্ষ থেকে ভদ্র গোছের একজন বেড়িয়ে এলেন। এসে দাড়ালেন আমার পাশে বসা লোকটার সামনে। মুখে হাসি বুকে বল— লোকটাকে দেখে এই লাইন গুলো কেন জানি মাথায় ঘুরছিলো। লোকটা হাসিমুখে পাশে বসা ধ্যানীকে বললেন”কি মজিদ সাহেব,খাবেন না?”

 

মজিদ সাহেব ধ্যান ভেঙ্গে বললেন “না,তোরা হা”

 

লোকটা আবার একগাল হেসে বললেন “ কেন, ক্ষিদা নাই?”

 

“না, আমার খাওয়া লাগেনা,তোরা খা”

“আপনাকে কি তিনি ক্ষমতা দিয়ে দিলেন নাকি না খেয়ে বাঁচার ?”

 

“হু,তিনি আমারে ক্ষমতা দিছেন, তবে ক্ষমতা দেখাইতে মানা করছেন”

 

“কেন,কেন?”

“আমাকে তিনি বলছেন, তোকে ক্ষমতা  দিলাম ,কিন্তু এ ক্ষমতা কাউরে দেখাতে পারবিনা, আরো বলছে আমি অনেক দিন বাঁচবো ,কিন্তু এভাবেই বাচা লাগবে” । ( এ পর্যায়ে আমি চিন্তা করলাম,এই তিনি টা কে, যার থেকে মজিদ সাহেব ক্ষমতা প্রাপ্ত হয়েছেন)

ফেসবুক কমেন্টস

Reactions

0
0
0
0
0
0
Already reacted for this post.

প্রতিক্রিয়া