লিখেছেন Apu Nazrul
ঢাকা শহরের একটা কোণে আটকে যাওয়া স্থবির-নিস্তরঙ্গ জীবন। পিছনে সবুজ ঘাস, সামনে শহরের দঙ্গল। আর এভাবেই সারাটা জীবন কেটে গেলো শহর নামের শহরতলীতে। ফেলে আসা চট্টগ্রামে, আর এখন ঢাকাতেও! চট্টগ্রামে কর্ণেলহাট থেকে জিইসি-আগ্রাবাদ-নিউমার্কেট যেখানেই যাই বলতাম টাউনে যাচ্ছি। ঢাকায় এসে বছরখানেক থাকলাম কলাবাগান-লেকসার্কাস। প্রথমদিনই এক বন্ধু আড্ডা দিতে ডাকলো রবীন্দ্র সরোবরে। ভেবেছিলাম বাসার সামনে রবীন্দ্র সরোবর, প্রতিদিনই যাওয়া হবে। শীতকালে ক’দিনের মর্ণিং ওয়াকে আলফা গং ওলাদের সাথে মাখামাখি ফুরোলে কালেভাদ্রেও আর যাওয়া হয়নি রবীন্দ্র সরোবর। ততোদিনে আমি একটা সারাসেনের মালিক হয়েছি। সেই পাখা পিঠে ঢাকা ঘুরি-রাস্তাঘাট চিনি। শহরের ইউটিলিটি বলতে মন খারাপ বিকেলে দৃকে কি চলছে দেখে আসা বা স্কয়ার হাসপাতালের ক্যাফেতে গিয়ে স্যুপ খেতে খেতে ঘষা কাচের ওপারের ব্যাস্ত পান্থপথের ক্লান্ত পান্থজনদের দেখা। ভালো কোনকিছুই বেশিদিন থাকেনা, আমাদের পঞ্চমী বোর্ডিংও ভেঙে গেলো।
কদিন পর আমার পক্ষেও আর সাত সকালে সাতাশ এর জ্যাম ফাঁকি দিতে রাজাবাজার-খামারবাড়ি রিকসা দাবড়ে শেষমেষ সংসদ ভবন খেজুরবাগান পেরিয়ে সেই “থোড়-বরি-খাড়া” প্রাইম মিনিষ্টারে নিয়মিত কাটা পড়াটা ঠিক পোষাচ্ছিলো না। চলে আসতে হলো মিরপুর ডিওএইচএসের তথাকথিত ভদ্রপল্লীতে! না ঈশ্বর এখানেও অনুপস্থিত! সেই ‘না শহর না গ্রামে’র আমি আবার সেই ‘না শহর না গ্রামে’ ফিরে আসলাম। ঢাকা শহরে কত কিছু হয়, প্রতিদিন কত আয়োজন এখানে সেখানে! আমার তেলে ঠিক পোষায় না দুই কোটি অধিবাসী আর এক কোটি অনাবাসীকে ঠেলে এসে তোমার বুকের পাজর গুণে যেতে। তাই এখনো বোধহয় কালেভাদ্রে শহর দেখতে “শহরে” যাই!
* ইসলাম বলে বেহেস্ত আর দোজখের মাঝখানে একটা অদ্ভুত জায়গা আছে। (সূরা আরাফ দ্রষ্টব্য) যার নাম আরাফ। যাদের পাপ-পূণ্য গোনার পর টাই হবে আবার নবীর শাফায়াত নামক বেনিফিট অব ডাউটও পাবেন না তাদের স্থান হবে আরাফে। আমার স্থানও মনে হয় আরাফেই হবে!