একটি দুপুর ও গজলের গল্প

Please log in or register to like posts.
পোস্ট

“হে নামাজী আমার ঘরে নামাজ পড় আজ ,দিলাম তোমার চরণ তলে হৃদয় জায়নামাজ”  নজরুলের এই গজল টি আমরা হয়ত অনেকেই শুনেছি। তবে আমরা ক জন ই বা জানি গজলটি কখন, বা কোন পরিস্থিতিতে নজরুল লিখেছিলেন। আসুন জেনে আসি নজরুলের এই গজল টির সাথে জড়িত মজার একটি  ঘটনা সম্পর্কে ।        

কবি কাজী নজরুল ইসলাম যখন ইসলামি হামদ, নাত, গজল রচনা শুরু করলেন, সে সময়কার একটি ঘটনা । সুপরিচিত শিল্পী আব্বাসউদ্দিন অনেক খোঁজাখুজি করে নজরুলকে না পেয়ে একদিন সকালে তার বাসস্থানে চলে গেলেন।আব্বাস উদ্দিন নজরুলের বাসায় গিয়ে দেখলেন, নজরুল গভীরমনোযোগে কি যেন লিখছেন। নজরুল ইশারায় তাকে বসতে বললেন ।

আব্বাসউদ্দিন অনেক সময় ধরে বসেছিলেন,পরে  জোহরের নামাজের সময় হয়ে এলে তিনি উসখুস করতে লাগলেন ।নজরুল জিজ্ঞেস করলেন ,’কী, তাড়া আছে, যেতে হবে?’আব্বাসউদ্দিন তখন বললেন , “’ঠিক তাড়া নেই, তবে আমার জোহরের নামাজ পড়তে হবে। আর এসেছি একটা ইসলামি গজল নেবার জন্য। গজল না নিয়ে আজ যাওয়া হচ্ছে না। নজরুলকে তার বাউন্ডুলে স্বভাবের জন্য ঘরে পাওয়া যেতনা, তাই এভাবেই অনেকেই তার কাছ থেকে লেখা আদায় করতেন।  নামাজ পড়ার কথা শুনেই নজরুল একটি পরিষ্কার চাদর বিছিয়ে দিলেন আব্বাস উদ্দিন যেন নামাজ আদায় করতে পারেন। আব্বাসউদ্দিন জোহরের নামাজ শেষ করার সাথে সাথেই নজরুল তাঁর হাতে এক তা কাগজ ধরিয়ে দিয়ে বললেন ‘এই নাও তোমার গজল’। আর এই গজল টিই হলো —–           

               

“হে নামাজী আমার ঘরে নামাজ পড় আজ

দিলাম তোমার চরণ তলে হৃদয় জায়নামাজ।

আমি গোনাহগার বে-খবর

নামাজ পড়ার নাই অবসর

তব, চরণ-ছোওয়ার এই পাপীরে কর সরফরাজ।।

তোমার অজুর পানি মোছ আমার পিরহান দিয়ে

আমার এই ঘর হউক মসজিদ তোমার পরশ নিয়ে

যে শয়তান ফন্দিতে ভাই

খোদার ডাকার সময় না পাই

সেই শয়তান থাক দূরে (শুনে) তকবীরের আওয়াজ

হে নামাজী আমার ঘরে নামাজ পড় আজ।।”   

ফেসবুক কমেন্টস

Reactions

1
0
0
0
0
0
Already reacted for this post.

প্রতিক্রিয়া

1

মন্তব্য করুন