–শিক্ষা, সংস্কৃতি, অর্থকড়ি, জ্ঞান-বুদ্ধি, দৃষ্টভংগি সহ নানান বিষয়ে পেছনে ফেলে আসা মানুষগুলোকে সামনে নিয়ে না আসলে তারা আপনাকে টেনে তাদের কাতারে নিয়ে আসবে। নিজেদের স্বার্থে তাদের কে সামনে নিয়ে আসতে হবে৷ এতে করে দেশের সুষম উন্নয়ন হতে পারে। পেছনে ফেলে আসা মানুষগুলো কে সামনে আনার দায়িত্ব আমাদের সবার।
–মনে হয় ২০০৪ সালের পর এইবার সর্বোচ্চ সময় ধরে গ্রামে অবস্থান করার সুযোগ হলো৷ ভালো একটা অভিজ্ঞতা হলো৷ অভিজ্ঞতা ভালো খারাপ ব্যাপার না। অভিজ্ঞতা হলো সেটাই বড় ব্যাপার৷ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, এলাকার চেয়ারম্যান, মেম্বার, সমাজের সর্দার সবার ধৈর্যের প্রশংসা করতে হয়৷ প্রত্যেকের প্রতি সম্মান বেড়ে গেছে।
–শেকড় কে সবাই ভালোবাসে৷ সবাই শেকড়ের সন্ধানে ফিরে আসতে চাই৷ এতোদিন এককভাবে ভাবতাম যারা বড় হয়ে গেছে তারা শেকড় কে ভুলে স্বার্থপর হয়ে গ্রামের খোজ খবর রাখেনা৷ এইবার বুঝলাম অনেকে চেষ্টা করে হাল ছেড়ে দেয়৷ হাল ছেড়ে শেকড় কে ভুলে যায়। হাল ছেড়ে দেয়া ঠিক না। শেকড়ের জন্য কাজ করে যেতে হবে৷ নানান সমস্যা ছিলো, আছে এবং থাকবে। সেগুলো থেকে মুখ না ফিরিয়ে সমাধানের চেষ্টা করতে হবে।
–ভালোবাসি প্রিয় কাঞ্চন নগর। কিছু মানুষের সহজ সরল মুখ, সহজ সরল আচরণ দেখে যেমন অসম্ভব রকম ভালোলাগা কাজ করে আবার কিছু মানুষের কিছু অদ্ভুত আচরণ দেখে অনেক কষ্ট লাগে। সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। দূরের মানুষের অসম্ভব রকমের পরোপকারী মনোভোব যেমন দেখেছি তেমনি দেখেছি আপনজনের কুৎসিত রুপ। আল্লাহ সবাই কে হেদায়েত দিক। মানুষকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার মন মানসিকতা দিক।
হে মোর দুর্ভাগা দেশ, যাদের করেছ অপমান
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর—গীতাঞ্জলিহে মোর দুর্ভাগা দেশ, যাদের করেছ অপমান,
অপমানে হতে হবে তাহাদের সবার সমান!
মানুষের অধিকারে
বঞ্চিত করেছ যারে,
সম্মুখে দাঁড়ায়ে রেখে তবু কোলে দাও নাই স্থান,
অপমানে হতে হবে তাহাদের সবার সমান।মানুষের পরশেরে প্রতিদিন ঠেকাইয়া দূরে
ঘৃণা করিয়াছ তুমি মানুষের প্রাণের ঠাকুরে।
বিধাতার রুদ্ররোষে
দুর্ভিক্ষের দ্বারে বসে
ভাগ করে খেতে হবে সকলের সাথে অন্নপান।
অপমানে হতে হবে তাহাদের সবার সমান।তোমার আসন হতে যেথায় তাদের দিলে ঠেলে
সেথায় শক্তিরে তব নির্বাসন দিলে অবহেলে।
চরণে দলিত হয়ে
ধুলায় সে যায় বয়ে
সে নিম্নে নেমে এসো, নহিলে নাহি রে পরিত্রাণ।
অপমানে হতে হবে আজি তোরে সবার সমান।যারে তুমি নীচে ফেল সে তোমারে বাঁধিবে যে নীচে
পশ্চাতে রেখেছ যারে সে তোমারে পশ্চাতে টানিছে।
অজ্ঞানের অন্ধকারে
আড়ালে ঢাকিছ যারে
তোমার মঙ্গল ঢাকি গড়িছে সে ঘোর ব্যবধান।
অপমানে হতে হবে তাহাদের সবার সমান।শতেক শতাব্দী ধরে নামে শিরে অসম্মানভার,
মানুষের নারায়ণে তবুও কর না নমস্কার।
তবু নত করি আঁখি
দেখিবারে পাও না কি
নেমেছে ধুলার তলে হীন পতিতের ভগবান,
অপমানে হতে হবে সেথা তোরে সবার সমান।দেখিতে পাও না তুমি মৃত্যুদূত দাঁড়ায়েছে দ্বারে,
অভিশাপ আঁকি দিল তোমার জাতির অহংকারে।
সবারে না যদি ডাক’,
এখনো সরিয়া থাক’,
আপনারে বেঁধে রাখ’ চৌদিকে জড়ায়ে অভিমান–
মৃত্যুমাঝে হবে তবে চিতাভস্মে সবার সমান।