তাকে নিয়ে বলবার বেশি কিছু নেই, ভাবের মানুষ তিনি অথবা ভাবের ভাব ধরেন! মানুষের মনে ভাবের উদয় করিয়া নিজে ফ্যালফ্যাল করিয়া চাহিয়া থাকিতে তিনি বেশ পাকাপোক্ত খেলোয়াড়। খেলোয়াড় বললে ভুল বলা হবে, তিনি শুধু খেলোয়াড় নন, পেশাদার খেলোয়াড়। ঠোটের কোনের বক্র হাসি হেসে সামনের জনের সাথে মস্তিষ্কের খেলা খেলতে খেলতে হাসেন। মাঝে মাঝে দেখি দূর দিগন্তের দিকে তাকিয়ে আপনমনে একচোট হেসে নিলেন। বোধয় কারো সাথেই মনে মনে এক মোক্ষম দাও মেরে বসলেন।
তাকাতেই বললেন” কি দেখস?”
কিছুই বললাম না, বললে তার ভাব চলে যাবে।
তিনি পেশাদার শখের বেকার। বেকার সম্প্রদায়ের তাজ তিনি। কোথায় আছো জিজ্ঞেস না করে তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, কিরে কয়টা ছাড়লি!
আজকেই দেখা হলো তার সনে। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই এযাবৎ কয়টা ছাড়লেন? । তার হিসেব থাকার কথা নয়, ছিলোও না। তবুও পাশের মামার কথায় বুজলাম, ধরা ,ছাড়া, ইন্টারভিউ কেলাঙ্গারি চলছে তার। কিছুদিন আগেই ঢাকায় যাওয়ার টিকিট কেটে বালিশের নিজে রেখে বেলা অবধি ঘুমিয়ে তিনি আরেকবার প্রমান করলেন কেনো তিনি শখের বেকার! টিকিট কেটেও ইন্টারভিউর হলে তার টিকির দেখা পাওয়া যায়না মাঝে মাঝেই।
ভালো আছেন ঘুমিয়ে আছেন, বাস্তব এই শক্ত পৃথিবীতে তার মত এক দুজন লোকের খুব দরকার। তবে এ সব লোক ও শেষ পর্যন্ত ধোপে টিকেনা। তাদের আনন্দের শেষ হয়, বলি দেওয়ার দিন শেষে নিজেরাই এরা একদিন বলি হয়। তবে এই যে আমাদের নুর উদ্দিন চৌধুরী , তাকে দেখে চেয়ারে বসে থেকে ছড়ি ঘূর্নায়মান প্র্যাক্টিকাল বসের সাথে বা সরকারী বা প্রাইভেট চাকরের সাথে মেলানো যায়না। আমরা তো চাকরের কাজ করেই চলেছি সে সরকারী হোক বা বেসরকারী, তবে যারা নুর ভাই এর মত এখনো বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছেন তাদের শুভকামনা। নুর ভাইরা হয়ত ইন্টারভিউ না দিয়ে নিয়ে আসেন। এমন ও দরকার আছে যারা ইন্টারভিউ এর হোমড়া চোমড়া ব্যাক্তিদের দিকে তাকিয়ে একচোট হাসার হিম্মত রাখে।
তবে নুর ভাইকে দেখে আমার আফসোস হয়। মনে হয় আজ হতে ৫/৭ বছর পরে তিনিও বাস্তবতার শিকলে আটকা পড়বেন। স্বাধীনতার ডানা কেটে যাবে তার! সে সমইয় নুর ভাই হয়ত ফেলে আসা দিনের কথা চিন্তা করে আফসোস করবেন। তখন তারি পাশে বসে আরেকজন নতুন দিনের নুর হিহি শব্দে হেসে উঠে আকাশ বাতাস কম্পিত করবে। সেই হাসিতে হয়তো নুর টাইপের লোকদের আত্মা কিছুটা শান্তি পাবে। যে ভাবে নুর ভাইদের দেখে এমতা বন্দীদশায় ও আমরা শান্তি পাই !চরম শান্তি!