রিপন কথন ,২য় পর্বঃ পিতৃ-পরিচয়

Please log in or register to like posts.
পোস্ট

নরসিংদীর ছেলেদের বদনাম শুনেছিলাম এক বন্ধুর মুখে, তাই রিপনের মুখপানে শান্ত দৃষ্টি নিক্ষেপ করে আমি আমার বিচলিত মন কে শান্ত রাখার প্রয়াশ পেলাম।  রিপনের এখন যে বয়স,এ বয়সে ধুম করে একটা খুন করে বসা কঠিন ব্যাপার না। এখন হচ্ছে তার বেড়ে ওঠার বয়স, মাথা গরম থাকতেই পারে। 

ধুম করে একটা খুন করে বসলে, লোকে হয়ত বলবে “আরে বাদ দেন,ছোট ছেলে রাগের  মাথায় মেরে দিসে” । 

আর আমার নিস্তেজ শরীর নেতিয়ে পড়ে রবে । এ আমি ভাবতেই পারছিনা, বাদ দি সে কথা।  

রিপন কে সাহস করেই জিজ্ঞেস করলাম , “আসল বাবা কই গেসে?’ 

রিপনের নির্বিকার উত্তর সে আমাদের ছোট কালেই দেশ ছাড়ছে, কই গেসে ,ক্যান ছাড়ছে, আল্লাহ মালুম” 

“হুম” আমি বিজ্ঞের মত বললাম। এটা ছাড়া আমি আর কিই বা বলতে পারি। জিজ্ঞেস করবো নাকি , কেমন খারাপ তার সৎ বাবা? 

 

জিজ্ঞেস করার আগেই অবশ্য রিপন ঝেড়ে কাশলো, ” এক কাঠফাটা রোদের দিন শুনি মায়ে নতুন বিয়ে করছে, মনরে শক্ত করে কথাটা মাইনা  লইলেও , দিনে দিনে সেই সৎ বাপের অত্যাচারে  দুনিয়া আন্দার লাগে” । 

“গ্রামের শালিশে কথা উঠে নাই?”

“ওই লোক, চ্যায়ারম্যান, মেম্বার রে টেকা খাওয়াইয়ে পকেট করছে, হের শালিশ হইবোনা এই দুনিয়ার কোর্টে,তার আসল বিচার হাসরের ময়দানে হইব ।  তবে সুযোগে পাইলে আমি কোবায়ে খুন করতাম” । 

“হুম” , বৃষ্টিটা আরো বেড়েছে , এই বৃষ্টিতে ভিজতেও ইচ্ছে করছেনা, আবার এই রিপনের থ্রিলার শুনার ইচ্ছেও নেই, বাধ্য হয়েই তীর্থের কাক হয়ে বৃষ্টি থামার অপেক্ষা করতে লাগলাম। আলগোছে মাথা সরিয়ে রিপনের দিকে চাইলাম। তার চোখ জোড়া ভাটার মত জ্বলজ্বল করছে। সে চোখে আদিম খুনের নেশা। পারে, এ মানুষ মানুষকে খুন করতেই পারে! 

সময় কাটাতে রিপনকে জিজ্ঞেস করলাম,”সৎ বাবা কি করে? নাম কি?”

সে দায়সারা ভাবে উত্তর দিলো, ” অনীল তার নাম,  খামারের কাম-কাজ জানে, সেটাই কইরে খায়”

“হিন্দু?”

“হুম, রমজান নাম  নিয়ে আমাদের সাথে আছে, আমারে গালি দেওয়ার সময় সেই নিজের মুক্ষে একবার বলসিলো” 

 

আরোঃ

রিপন কথন, ১ম পর্বঃ তার সাথে পরিচয়

রিপন কথনঃ৩য় পর্বঃ খুন রাঙ্গা জীবন

 

ফেসবুক কমেন্টস

Reactions

0
0
0
0
0
0
Already reacted for this post.

প্রতিক্রিয়া