বিশ্বকাপের আসরে ইতিমধ্যে ৬৫+ এর মত গোল হয়েছে । বিশ্বকাপের শুরু থেকেই চোখ ছিলো মেসি,ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, নেইমারদের উপর । কিন্তু বিশ্বকাপের আসর যত সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তত নতুন তাঁরকাদের দেখা পাচ্ছে বিশ্ব । যাদের নিয়ে কথা হয়নি বিশ্ব তারকাদের আড়ালে পড়ে যাওয়ায় ,তারাই জন্ম দিচ্ছেন নিত্য নতুন কাব্যের ।
এমনি একজন বেলজিয়ামের রোমেলু লুকাকু । প্রথম রাউন্ড থেকেই চমৎকার খেলে যাচ্ছেন তিনি। তবে তাঁর অতীত কিন্তু সংগ্রামের । বাবা ছিলেন কঙ্গোর অভিবাসী । এন্টওয়ার্প -বেলজিয়ামের ২য় বৃহত্তম শহর সেখানেই জন্ম লুকাকুর । গরীব ছিলেন , জীবনের মান ছিলো নিম্ন মানের । খাবার সংকটে পরেছেন অহরহ, বিদ্যুৎ এর অভাব আর সংসারের টানাটানি দেখেই বড় হয়েছেন রোমেলু লুকাকু ।সীদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পেশাদার ফুটবল খেলেই দারিদ্রের কষাঘাত থেকে মুক্ত হবেন ।
তিনি পেরেছেন বেশ ভালো ভাবেই। প্রথম ম্যাচে পানামার জালে তাঁর নিজের দেওয়া ২ গোলে বেলজিয়াম জয় পায় ৩-০ ব্যবধানে । গত বিশবকাপ আশানুরূপ না হলেও এবার ঠিকি নিজের জাত চিনিয়ে দিচ্ছেন লুকাকু।
এর মধ্যে হয়ে গেলো বেলজিয়ামের ২য় ম্যাচ। তিউনিশিয়ার বিপক্ষে বেলজিয়াম জয় তুলে নিলো ৫-২ গোলের ব্যবধানে । রোমেলু লুকাকু ও হ্যাজার্ডের জোড়া গোলে শেষ ষোল তে যাওয়া নিশ্চিত বেলজিয়ামের । ৮ মিনিটের মাথায় বেলজিয়াম হ্যাজার্ডের গোলে এগিয়ে যায় । ১৬ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন লুকাকু।
রোমেলু লুকাকুর এবারের গোল ক্ষুদা যেন থামছেই না। বিরতিতে যাওয়ার আগে তাই নিজের ২য় গোল্টী করে আরেকবার জানান দিলেন নিজের ক্ষমতার । এই বিশ্বকাপে গোলের পর গোল করে লুকাকু ঝেড়ে ফেলছেন কষ্টের অতীত কে।
২ ম্যাচ শেষে রোমেলু লুকাকুর করা ৪ গোল তাকে বসিয়েছে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পাশে। আসলে বিখ্যাতরা হয়ত একটু অন্যরকম ই হয়, তাঁদের জীবনের গল্পটাও ভিন্ন হয়।
এখন লুকাকুর পায়ের কাছেই যেন সাফল্য! লুকাকুদের একটা সপ্তাহ ঠিক মত চলার টাকা ছিলোনা, ছিলেন কপর্দকহীন , তবু লুকাকুর স্বপ্ন ছিলো একদিন ফুটবল পায়েই বিশ্ব জয় করবেন, জয় করবেন দারিদ্রতাকে ।তিনি পেরেছেন দারিদ্রতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাতে , বেলজিয়ামের স্বপ্ন ও এখন রোমেলু লুকাকুর সাথে মিশে একাকার, তবে ভালো কিছু করতে হলে আরেক স্ট্রাইকার হ্যাজার্ড কেও ভালো কিছু উপহার দিতে হবে।
ফুটবল বিশ্বকাপের এবারের উপহার একজন রোমেলু লুকাকু, অথবা এটাও বলা যায় বিশ্বকাপ কে এই গোল গুলো রোমেলু লুকাকুর উপহার । বেঁচে থাকুক লুকাকুরা, বেঁচে থাকুক ফুটবল, পরাজয় হোক দারিদ্রতার।