ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি-যার মাধ্যমে তিনি দেশকে অভিবাসী শিবির হতে দেবেন না বলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, সেই নীতি সম্পর্কে জানার আগে আসুন জেনে আসি ট্রাম্পের নিজের বংশের গোড়া সম্পর্কে ।ট্রাম্পের দাদা ছিলেন জার্মানীর অভিবাসী। তার দাদা যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হয়ে আসেন ১৮৮৫ সালে । তাদের পারিবারিক পদবি ছিলো ড্রাম্পফ , পরে এটি অপভ্রংশ হয়ে ট্রাম্প হয়ে যায়।ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্ম ১৯৪৬ সালের ১৪ জুন।২০১৬ সালের ৮ নভেম্বরের নির্বাচনে তিনি যুক্ত্রাষ্ট্রের ৪৫ রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প কে নিয়ে নানা ধরনের বিতর্কের শেষ নেই । ক্ষমতায় আসার পর থেকে এখন পর্যন্ত নানা বিধ সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে ট্রাম, এর কিছু আবার তাঁর নিজের সীদ্ধান্তের ফসল। ট্রাম্প প্রথম থেকেই অভিবাসন বিরোধী । সেটা অনেকটা কট্টর ভাবেই। এটা ছিলো তাঁর ২০১৬ এর নির্বাচনী প্রচারনার অংশ। তিনি নির্বাচনের পরবর্তি সময়টাতে কিভাবে তাঁর কাজ পরিচালনা করেন সেটাই ছিলো দেখার বিষয় ।
তা তিনি বেশ ভালোভাবেই করছেন, অন্যের ভালো হোক না হোক, নিজের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি তিনি রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর। বিভিন্ন মুসলিম দেশের নাগরিকের যুক্ত্রাষ্ট্রে প্রবেশ নিষেধ করেছেন। বাতিল করেছেন ওবামা প্রশাসনের অভিবাসন নীতি । এ যেন ওবামা পরবর্তি এক নতুন যুগ। এই যুগ আলোর না অন্ধকারের তাঁর জবাব সময়ের হাতেই থাক!
ট্রাম্পের এই নীতির বিপক্ষে স্বয়ং ফার্স্ট লেডি মেনালিয়া ট্রাম্প ও কথা বলেছেন । যদিও ট্রাম্প মনে হয় না নিজের অবস্থান থেকে সরতে ইচ্ছুক। কোনভাবেই তিনি চাইছেন না তার ভাষায় -যুক্তরাষ্ট্র একটি অভিবাসী শিবির হোক। তবে এই নীতির বিরুদ্ধে প্রশাসনের বিরুদ্ধে চাপ বাড়ছে, ডেমোক্রেটদের সাথে যোগ দিচ্ছেন রিপাবলিকানরাও। কিন্তু রাজনৈতিক টানাপোড়োনের শিকার হচ্ছে যারা তাদের নিয়ে ট্রাম্পের তেমন চিন্তা নেই ।
বলা যাক যুক্তরাষ্ট্র -মেক্সিকো সীমান্তের কথা , সেখানে শুধুই হতাশার আর কান্নার চিত্র । বাবা-মা থেকে আলাদা করে দেওয়া হচ্ছে শিশুদের, এমন নীতি মানবতার কোন পর্যায়ে পরে এর উত্তর হয়ত ডোনাল্ড ট্রাম্প ই দিতে পারবেন। এপ্রিলে শুরু হয় জিরো টলারেন্স নীতির বাস্তবায়ন, এখন পর্যন্ত এই নীতির অধীনে দুই হাজার তিনশ এর বেশি শিশুকে তাদের মা -বাবা থেকে আলাদা করা হয়েছে। ট্রাম্প তার নীতির বাস্তবায়ন করছেন বেশ ভালোভাবেই!
মেলানীয়া ট্রাম্প থেকে শুরু করে সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের স্ত্রী লরা বুশ , সবাই সোচ্চার । শিশুদের উপর এমন অমানবিক অত্যাচার মেনে নেওয়া যায়না কিছুতেই।
এটা ভুলে গেলে চলবেনা ট্রাম্প নিজেই একজন অভিবাসীর বংশোদ্ভূত সন্তান । যুক্ত্রাষ্ট্র গঠনে মুখ্য ভূমিকা অভিবাসীদের-ই। ট্রাম্পের দাদাও একজন অভিবাসী,তিনি এসেছিলেন জার্মানী থেকে। সেই ডোনাল্ড ট্রাম্প-ই চাইছেন অভিবাসী মুক্ত দেশ গড়তে! এর ফলাফল হয়ত কালের-মহাস্রোতে একদিন ঠিকি মিলবে । তখন হয়ত সীদ্ধান্ত বদলানোর জন্য সময়টা অনুকূল নাও থাকতে পারে।
রেফারেন্স bn.wikipedia.org