কেউ বলবেন মৃত্যু থেকে ফিরে আসা,কেউ বলবেন পুনঃজন্ম। আমি বলব টাইম ট্রাভেলিং!
ঘটনা দিনদুয়েক আগের। স্থানীয় সময় (সৌদি) রাত প্রায় এগারোটা ছুঁইছুঁই। camry গাড়ির A.C রিপ্লেস করছিলাম। তলপেটে চাপ অনুভূত হল হঠাৎ করেই, সাথে প্রস্রাবের বেগও ছিল খানিকটা। ভাবলাম গোস্তের স্যান্ডুইচ আর (citrus) কোল্ড ড্রিং পান করার কারণে এমনটি হচ্ছে। তাই দেরি না করে বার্থরুমে গিয়ে যথারীতি পয়ঃকার্য প্রায় শেষের দিকে। আচানক বমিবমি ভাব। বমিটা হয়েই গেল। ফিরে এল ছোট্টকালের সেই প্রথম আরবি পাঠ। “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”। যখন ২য় কলেমা পড়ছিলাম, আম্মা বললেন “তর্জনী উঁচিয়ে বল আসসাদু আল্লাহ্”। আমিও অনুকরণ করে চলেছি। একটু পর চোখ খুলে দেখি উপরে অনেকগুলো লাইট জ্বলছে আর কিছু মুখ খুবই চিন্তাক্লিষ্ট হয়ে ঝুঁকে আছে আমার মুখের উপরে। বুঝতে অসুবিধে হয়নি যে আমি হাসপাতালে আছি! অনুমান করছি কিছু একটা নিশ্চয় হয়েছে?
হ্যাঁ, অনেককিছু হয়ে গেছে। আমি প্রায় ১ঘন্টার অধিক বার্থরুমে পড়েছিলাম অচেতন হয়ে। অবিশ্বাস্যও হলেও সত্য যে,একজন ইন্ডিয়ান ছোট্ট ভেন্টিলেটর ভেঙে ভেতরে ঢুকে আমাকে উদ্ধার করেছে। আমার শ্বাস বন্ধ ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি সময় ধরে আর বার কুড়ি বুকে চাপ দেওয়ার পর হৃদপিণ্ডটা কাজ শুরু করেছিল!
প্রায় ১৫জন আমায় নিয়ে হাসপাতালে এসেছে। জীবিত আর মৃতের মধ্যে পার্থক্য কেবল শ্বাসপ্রশ্বাস! এরমাঝে সুঁই-স্যালাইন, নানারকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা! আমার কিচ্ছু মনে নেই।
আলহামদুলিল্লাহ্, আমি সম্পূর্ণ সুস্থ। আমার মনে হয়নি বা এখনও হচ্ছে না যে আমার কিছু হয়েছিল। শুধু সবার কথা থেকে বুঝতে পারছি আমি একটা দীর্ঘ সময় পৃথিবীতে ছিলাম না।
কোথায় ছিলাম?
কেউ না জানলেও আমি জানি। আমি শৈশবে ছিলাম। মক্তব থেকে ফিরে এসে মাকে পড়া দিচ্ছিলাম। আর মা তর্জনী উঁচু করে বলছে “তর্জনী উঁচু করে আসসাদু আল্লাহ্ বল”!
ভাবছি, ফিরে না আসলে মন্দ হত না। তারপরেও আমার সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ।