এস এম সুলতানঃবাংলাদেশী প্রখ্যাত চিত্রশিল্পীর জীবনের গল্পঃ
এস এম সুলতান বাঁশি বাজাতেন বেশ ভালো,পাশাপাশি তিনি ছিলেন সুরের সাধক। সুলতান এর ছবিতে গ্রামীণ দ্বন্দ্ব ,অর্থনৈতিক অবস্থাও ফুটে উঠেছে। ফুটে উঠেছে গ্রামীণ জীবনের পরিপূর্ণতা আর প্রানপ্রাচুর্য। শেখ মোহাম্মদ সুলতানের জন্ম ১৯২৩ সালের ১০ আগস্ট। তিনি ছিলেন বাংলাদেশি প্রখ্যাত চিত্রশিল্পীদের মধ্যে অন্যতম।তিনি এস এম সুলতান নামে সর্বাধিক পরিচিত ছিলেন। গ্রামের কৃষক , আর তাদের সংগ্রাম ও কাজে তিনি খুঁজে পেয়েছিলেন নিজের কর্ম-ছন্দ,জীবনের সুর-ছন্দ। আবহমান বাংলার ইতিহাস ,ঐতিহ্য , প্রতিবাদ,সংগ্রাম তাঁর শিল্পকর্মকে প্রতিনিয়ত প্রভাবিত করেছে।
সুলতানের অল্পবয়সের চারিত্রিক-গঠন সম্পর্কে আহমদ ছফা লিখেছেন:
কোনো কোনো মানুষ জন্মায়, জন্মের সীমানা যাদের ধরে রাখতে পারে না। অথচ যাদের সবাইকে ক্ষণজন্মাও বলা যাবে না। এরকম অদ্ভুত প্রকৃতির শিশু অনেক জন্মগ্রহণ করে জগতে, জন্মের বন্ধন ছিন্ন করার জন্য যাদের রয়েছে এক স্বভাবিক আকুতি। …শেখ মুহাম্মদ সুলতান সে সৌভাগ্যের বরে ভাগ্যবান, আবার সে দুর্ভাগ্যের বরে অভিশপ্তও।
পরিবারের একমাত্র সন্তান ছিলেন সুলতান । শৈশবে পরিবারসহ অনেকেই তাকে লাল মিয়া বলে ডাকতো।দরিদ্র কৃষক-পরিবারে তার জন্ম হয়েছিল ।তার মাতাঃ মোছাম্মদ মেহেরুননেসা। পিতা ছিলেন রাজমিস্ত্রী।পিতার নাম শেখ মোহাম্মদ মেসের আলী।আগস্ট ১০, ১৯২৩ সালে ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান বাংলাদেশ) নড়াইলের মাসিমদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন শেখ মোহাম্মদ সুলতান। এস এম সুলতানের বাবার মূল পেশা ছিল কৃষিকাজ । ঘরামির কাজ করতেন বাড়তি আয়ের জন্য।১৯২৮ সালে নড়াইলের ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুলে তাকে ভর্তি করানো হয় যদিও তাকে বিদ্যালয়ে পড়ানোর মতো সামর্থ্য তার পরিবারের না ছিলোনা ।বাবার ইমারত তৈরির কাজ সুলতানকে প্রভাবিত করে এবং তিনি আঁকা-আঁকি শুরু করেন রাজমিস্ত্রীর কাজের ফাঁকে। তিনি সেই বিদ্যালয়ে ছেড়ে বাড়ি ফিরে বাবার সহোযোগী হিসেবে রাজমিস্ত্রীর কাজ শুরু করেন মাত্র পাঁচ বছর অধ্যয়নের পর।
ছবি আঁকা শেখার জন্য সুলতান কলকাতা যেতেও প্রস্তুত ছিলেন। কলকাতায় গিয়ে চিত্রশিল্পের শিক্ষা চালিয়ে যাবেন অর্থ উপার্জনের কোনো চেষ্টা করার পাশাপাশি। এরুপ আর্থিক সঙ্গতি তার পরিবারের কখনোই ছিল না। এসময়, ধীরেন্দ্রনাথ রায় পৃষ্ঠপোষক হিসেবে সুলতানকে কলকাতা নিয়ে যান ১৯৩৮ সালে । সুলতান কলকাতায় থাকা অবস্থায় প্রায় তিন বছর ধীরেন্দ্রনাথের বাসায় থেকে লেখাপড়া চালিয়ে যান।দশ বছর বয়সে, যখন তিনি বিদ্যালয়ে পড়েন তখন ড. শাম্যপ্রসাদ মুখার্জি নড়াইলে ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুল পরিদর্শনে এলে সুলতান তার একটি পেন্সিল স্কেচ আঁকেন। তার আঁকা স্কেচ দেখে শাম্যপ্রসাদ বিশেষভাবে আকৃষ্ট হন ।এই পেন্সিল স্কেচের মাধ্যমেই শিল্পী হিসেবে সুলতানের প্রথম আত্মপ্রকাশ ঘটে। …।
…
রেফারেন্সঃ উইকিপিডিয়া