একজন হুমায়ূন আহমেদের জন্ম না হলে কি হত? বাংলাদেশ এক প্রবাদ পুরুষ হারাতো, পাওয়া হতনা হিমু আর মিসির আলীকে। অনেকেই বলেন প্রেম নিয়ে, প্রেমের জীবন নিয়ে লেখা অনেক সহজ।কিন্তু কজন পারবেন দুইজন মানুষকে বই এর পাতা থেকে তুলে এনে চোখের সামনে জিবন্ত করে ধরতে? পারবেন? মনে হয় না।
তাঁর বই নিমিশেই পড়ে ফেলা যায়। তাঁর বই এ যা আছে তা অন্যের বই এ নেই অন্যের বই এ যা আছে তা তাঁর বই এ পাবেন না।হুমায়ূন আহমেদের লেখা পড়ে তাঁর বিভিন্ন চরিত্রের প্রেমে মজিনি এমন কজন আছি ! হুমায়ূন আহমেদের গল্পের প্রতিটি লাইনে যেনো এক এক টা আলাদা সাহিত্যের ধারা বয়। সহজ,সরল, ভাষায় জটিল মানুষের জীবন কে আমাদের সামনে তিনি তুলে ধরেছেন পরিস্কার জলের মত। তাঁর লেখায় সব আছে , তবে বুঝে নিতে হয়। হুমায়ূন স্যারকে এক কথায় বলা যায় গল্পের জাদুকর । গল্পের পরতে পরতে যদি অনাবিল আনন্দ আর রহস্য না থাকলো , সে কিসের গল্প। বস্তু নিষ্ঠ লেখা যদি পাঠকের মন না ছুয়ে যেতে পারে সে কেমন লেখা। হুমায়ূন আহমেদ পেরেছিলেন। পাঠকের মন ও মগজে বাসা বাঁধতে। সাহিত্যের কঠিন ভাষা নয়, তিনি সাবলিল ভাবে যে কোন ঘটনাকে উপস্থাপন করে যান আর ঘোলা জল ধীরে ধীরে স্বচ্ছ জলে পরিনত হয়।
১৩ নভেম্বর ১৯৪৮ সালে তাঁর জন্ম। তিনি একজন বাংলাদেশি ঔপন্যাসিক ,নাট্যকার, ছোটগল্পকার, গীতিকার , চিত্রনাট্যকার ও চলচিত্র নির্মাতা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তি শ্রেষ্ট লেখক তিনি। তাঁর রচনা শৈলি অন্য লেখ,লেখিকাদের তুলনায় সম্পূর্ন আলাদা। নাটক ও চলচিত্র পরিচালক হিসেবেও তিনি বিখ্যাত। তাঁর গল্প পড়ার সময় সেই গল্পের জগতে হারিয়ে যাইনি এমন কজন আছি আমরা! শুধু জ্ঞান অর্জন যাদের লক্ষ্য হুমায়ূন আহমেদ তাঁদের জন্য নন, যারা জ্ঞান অর্জন কে সাহিত্যের পর্যায়ে নিয়ে যেতে চায়, হুমায়ূন আহমেদ তাঁদের জন্য । ময়মনসিংহ জেলার অন্তর্গত নেত্রকোণা মহুকুমার মোহনগঞ্জে তাঁর মাতামহের বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন । পিতা শহীদ ফয়জুর রহমান ও মা আয়েশা ফয়েজ ।তাঁর পিতা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন শহীদ হন। হুমায়ূন আহমেদের বাবা সাহিত্য অনুরাগী ছিলেন। তাঁর প্রকাশিত একটি গ্রন্থের নাম “দ্বীপ নেভা যার ঘরে” । তাঁর মার লেখা লেখির অভ্যাস না থাকলেও একটি আত্মজীবনী মুলক গ্রন্থ রচনা করেন । যার নাম “ জীবন যে রকম” । পরিবারে সাহিত্যের পরিবেশ ছিল শুরু থেকেই। তাঁর অনুজ জাফর ইকবাল দেশের একজন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক। সর্বকনিষ্ঠ ভ্রাতা আহাসান হাবিব একজন কার্টুনিস্ট ও রম্য সাহিত্যিক। হুমায়ূন আহমেদের তিন বোন হলেন সুফিয়া হায়দার, মমতাজ শহিদ, এবং রোকসানা আহমেদ ।
রেফারেন্স উইকিপিডিয়া