উচ্চশিক্ষিত চা-ওয়ালার একাল-সেকাল:২য় পর্ব

Please log in or register to like posts.
পোস্ট

 

পথে নেমে আমদের ইয়াদ হলো লোকটার নাম ই  আমরা জানিনা। আবার ফিরে যাবো কিনা ভাবছি, পরে ঠিক করলাম, কাল আবার আসবো। মাহামুদ আর আমি হাটছি, লক্ষ্য করছি মাহামুদের ধুমধাম ইংরেজি বলা কিছুক্ষনের জন্য বন্ধ হয়ে আছে। সম্ভবত ওই লোকটার তুখোড় ইংরেজি তাঁর এই হাল করেছে।

বাসায় এসে আমরা খাওয়া দাওয়া শেষ করে গল্প করছি। বলাই বাহুল্য গল্পের বিষয় নাম-না জানা সেই তুখোড় ইংরেজি বলা চা-ওয়ালা। আমরা সহমত হলাম, লোকটা বিনা কারনে চায়ের দোকান দিয়ে বসেনি,এর পেছনে নিশ্চই কোন গূড় রহস্য রয়েছে।  

পরদিন আমার স্কুলের চাকুরী ছিলো, সেখানে গিয়ে স্খুল শিক্ষিকাদের একজন কে ঘটনাটা বলল। তারা এতটাই উৎসুক হলো যে তারাও যেতে চাইলো। কিন্তু মেয়ে নিয়ে বাজারের মাঝ দিয়ে  যাওয়া ঝামেলা বলে আমি এ কথা সে কথা বলে কথার মোড় ঘুরিয়ে তাদের ওই চাওয়ালার কাছে নিয়ে যাওয়ার প্ল্যান্টা বানচাল করলাম।

সেদিন বিকেলেই আমি আর মাহামুদ আবার গেলাম দোকানটায়। এবার চানিয়ে জাকিয়ে বসলাম , আজকে পুরো ঘটনা না শুনে যাচ্ছিনা আর!

দোকানে অন্য মানুষ ও ছিলো, তারা চলে যাওয়ার জন্য কিছুক্ষন অপেক্ষা করলাম। এরপর আরো এক কাপ চায়ের ফরমায়েশ দিলাম আমি। চা পান করতে করতে জিজ্ঞেস করলাম,”কিছু মনে করলে ,আপনার নামটা জানতে পারি?”

 

“A tree is known by its fruit; a man by his deeds”

 

“জী তবুও জানতে চাইলাম”

“ নাম শুনার আগে আমার জীবন কেমন ছিলো জেনে নিন, নাম দিয়ে কি হবে”

জানতে চাওয়ার আগেই লোকটা বলতে শুরু করলো,” বাশখালী ডিগ্রী কলেজ থেকে বিয়ে পাশ করেছি, ভালো একটা কোম্পানীতে চাকরি করতাম, একদিন ছেড়ে দিলাম”

 

লোকটা চাকরি ছেড়ে দিলাম বলে চুপ করে গেলো। চিন্তা করছিলাম আমার কি জিজ্ঞেস করা উচিৎ হবে কেনো ছেড়ে  দিলেন? আবার একটা মানুষ চাকরি কি কারনে ছাড়লো জিজ্ঞেস করাটা কেমন যেন লাগছিলো ।

 

পথটা সোযা করে দিলো বন্ধু। দুম করে একগাল হেসে বলে বসলো”চাকরিটা কেনো ছাড়লেন আঙ্কেল?”  সে এমন ভাবে হাসলো যেন চাকরি ছাড়াটা একটা মজার ব্যাপার।

লোকটা  আমাদের কাছে এসে বসলো। বলতে লাগলো,”যে কোম্পানিতে চাকরি করতাম, সেখানে জিএম সাহেব খুব কড়া ছিলো। কথায় কথায়  খারাপ কথা বলত” আমার কি দরকার পড়ালেখা করে গালি খাওয়ার,বা আরেকজনের কথায় উঠবস করার, তাই চাকরি ছেড়ে দিলাম,এরকম আরো দুটো চাকরি ছেড়ে সীদ্ধান্ত নিলাম আর চাকরি ই করবোনা, বিনা নোটিশে চাকরি ছেড়ে বিভিন্ন ব্যবসায় জড়িয়ে গেলাম”

আমি বোকার মত জিজ্ঞেস করলাম “এই ব্যবসায় নামছেন?”

জিজ্ঞেস করা উচিৎ হয়নাই কারন,লোকতা বিভিন্ন ব্যবসার কথা বলেছিলো। মনঃক্ষুণ্ণ হয়ে লোকতা বল;এ উঠলো    ”Every work is important to me,don’t you think so?”

 

আমি শুধু বললাম”yes,I think so” । সে সময় আমার একটা স্টেশনারী দোকান ছিলো। অনেকেই সেটা নিয়েই আজেবাজে বলত। এই লোকটার কথায় আমি বেশ একটা ইন্সপাইরেশন পেলাম।

ফেসবুক কমেন্টস

Reactions

0
0
0
0
0
0
Already reacted for this post.

প্রতিক্রিয়া