আমার শিক্ষাজীবন

Please log in or register to like posts.
পোস্ট

–আমি দাখিল পাশ করি কাঞ্চন নগর রুস্তুমিয়া মুনিরুল ইসলাম দাখিলা মাদরাসা থেকে।

–মাদরাসার পাশেই কবরস্থান ছিলো। ছাত্র-ছাত্রীরা পড়া শিখে না আসলে হুজুর বরাবরের মতই হাইল্যাচোয়া আনতে বলতো। আমাকে না বললেও হাইল্ল্যাচোয়া আনতে কবরস্থানে আমি দৌড়ায় সবার আগে যেতাম। আমার ধারণা ছিলো আমি গেলে এমন হাইল্ল্যাচোয়া (বেত পড়ুন) আনবো যেটা কয়েকজন কে মারার পর ভেঙে যাবে। আর আমি যেহেতু ভালো ছাত্র আমাকে তো আর তেমন বকা দিবেনা। অন্যরা যাতে শক্ত মোটা হাইল্ল্যাচোয়া আনতে না পারে তাই আমি যেতাম। অভ্যাসটা রয়ে গেছে এখনো। অনেক সময় নিজে স্বপ্রণোদিত হয়ে শাস্তি দেয় যাতে অন্য কেউ বেশী শাস্তি দিয়ে না পেলে 🙂 । শাস্তি ততটুকু দেয়া উচিত যতটুকু বহন করা সম্ভব। পরিমাণ নির্ধারণে অনেক বিজ্ঞতার পরিচয় দিতে হয়। কতটুকু ঠিক সেটা অবশ্য বলা কঠিন। সে হিসাবে হয়তো সবাই সঠিক।

–যোহরের নামাযের বিরতিতে বাসায় ভাত খেতে যেতাম। এসেই নামাজ ধরতে হতো। এর পর যখন ক্লাস শুরু হতো সবার আগে হুজুরের প্রশ্ন থাকতো কে কে যোহরের নামাজ পড়ো নাই। আমাদের মধ্যে অনেকেই অপরাধী কে ধরিয়ে দিতো। যে ধরিয়ে দিতো তাকে সহ হুজুর বাকীদের মার দিতো। তাকে মারার কারণ হলো, যেহেতু সে বাকিদের ধরিয়ে দিয়েছে, হয় সে নিজেও নামাজ পড়ে নাই অথবা নামাজে অমনোযোগী ছিলো। আজকাল স্টুডেন্টদের কে দেখি, পরীক্ষা হলে যাদের কাজ মনোযোগ দিয়ে খাতায় লেখা তারা পরীক্ষা হলে বসে কে কি করছে, কে কোন জামা পড়ে আসছে সহ আরো নানান বিষয়ে ব্যস্ত। ওয়ারেন বাফেট বলেছিলেন, অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে থাকলে এক সময় ভরণ পোষণের জন্য অতি প্রয়োজনীয় জিনিস ও বিক্রি করে দিতে হবে। যারা পরীক্ষা হলে অতি প্রয়োজনীয় জিনিস বাদ দিয়ে অন্য জিনিস নিয়ে মাথা ঘামায় তারা আসলে পরীক্ষার খাতায় কে কি লিখে তা সহজে অনুমেয়।

–আমার মনে আছে, জীবনে একবার নির্দিষ্ট সময়ের আগে পরীক্ষা হল থেকে বের হয়েছিলাম। এসএসসি পরীক্ষার সময়। কি কারণে বের হয়েছি সেটা বলবোনা। সেদিন ভুলে ১ নাম্বারের একটা প্রশ্নের উত্তর লিখতে ভুলে যায়। এর পর কোনোদিন নির্দিষ্ট সময়ের আগে বের হয়নি। আমার মনে পড়ে এসএসসি পরীক্ষার সময় বাবা পরামর্শ দিয়েছিলো: সময় বেচে গেলে যাতে আমি পুরা স্ক্রিপ্ট টা পড়ে দেখি। তখন কোনো কি ওয়ার্ড বাদ পড়লে সেটা চোখে পড়বে। আর জায়গা থাকলে প্রতিটি প্রশ্নে কিছু যোগ করা যাবে। আর খুব যত্ন সহকারে সময় না দিলে নিজের ভুল নিজের চোখে ধরা পড়েনা। খুব খারাপ লাগে যখন দেখি সিনিয়র ব্যাচের কেউ আর পারছিনা বলে ৩০ মিনিট বা ১ ঘন্টা আগে এক্সাম হলে থেকে বেরিয়ে পড়ে। তখন মনে হয় এদের দৌড় বুঝি মুখস্থ বিদ্যা পর্যন্ত। ৩ ঘন্টা বরাদ্দকৃত সময় সম্পূর্ণ আপনার। সৃষ্টিশীল কিছু করার ক্ষমতা আপনার থাকতেই হবে।

–Effectiveness and efficiency এই দুইটা শব্দ আমি ব্যক্তিজীবনে খুব মানি। সবার স্নাতক ডিগ্রী ৪ বছরের। এই ৪ বছর শেষে সবার হাতেই হয়তো একটা সার্টিফেকেট থাকবে। আল্টিমেট সেই এগিয়ে যে এই ৪ টি বছর বাকিদের থেকে efficiently ব্যবহার করতে পেরেছে। আমার কাছে সময়ের অপচয় বলতে: সময় কে ব্যবহারের ক্ষেত্রে efficiency ensure করতে না পারা; সময় কে বেস্ট অল্টার্নেটিভ এর পেছনে ব্যয় করতে না পারা।

ফেসবুক কমেন্টস

Reactions

0
0
0
0
0
0
Already reacted for this post.

প্রতিক্রিয়া