আমার মেয়ে-বৃষ্টি

Please log in or register to like posts.
পোস্ট

এস এস সি পড়া অবস্থায় বিয়ে একই গ্রামের এডভোকেট আজিজ আহমদ চৌধুরীর চতুর্থ ছেলে নাজিম উদ্দিন এর সাথে। বিয়ের দিনটি ছিলো ১৯৮৭ সালের ২রা জানুয়ারি। ১৯৮৭ সালের ডিসেম্বর মাসের ২৩ তারিখ আমার কোল জুড়ে আসে আমাদের প্রথম সন্তান আসমা ফিরোজা বৃষ্টি।  সবাই বলতো মেয়েটা মায়ের মত ফর্সা হয়নি। তখন আমি মনে মনে খুব কষ্ট পেতাম।

আমার মেয়ে সাদা না হলেও খুব মিষ্টি চেহারার ছিল। এখন আমার মেয়ে তিন কন্যার মা। তিন মেয়ের নাম জুভিরিয়া, জুনাইরা, জিয়ারা। তবে আমার মেয়ে আমার কাছে এখনো সেই ছোট্ট বেলার মিষ্টি মেয়ে বৃষ্টি। বৃষ্টির নাম রেখেছিলো আমার শাশুরি । আমার শাশুরি বৃষ্টিকে খুব পছন্দ করতেন।  বৃষ্টির ভালো নাম ” আসমা ফিরোজা বৃষ্টি” । বৃষ্টির   দাদীর নাম ফিরোজা বেগম। দাদির নামের সাথে মিলিয়ে তাঁর নাম রাখা হয় আসমা ফিরোজা বৃষ্টি

আমার মামা শাশুড়ির ভাই যাকে আমরা যাদু মামা বলে ডাকি, তিনি আসমার  সাথে  ফিরোজা যোগ করে দিয়ে বললেন-“আমার বোনের নামের সাথে মিলিয়ে দিলাম” ।

সেই মিষ্টি মেয়ে বৃষ্টি দিনে দিনে বড় হতে লাগলো। যখন দুই বা আড়াই বছর বয়স তখন অনেকে বলত উকিল্বাড়ির সবচেয়ে মিষ্টি মেয়ে বৃষ্টি। বৃষ্টির ফুফা ইহাবের আব্বা প্রথম এই কথাটি বলেন। কলির নানিও বলত।  রুবলের ছোট খালা রুনুর জামাই নাকি একদিন সোহরাব কে বলেছে উকিল বাড়ীর সবচাইতে মিষ্টি মেয়ে বৃষ্টি। বৃষ্টির বয়স যখন চার বছর তখন বৃষ্টির আব্বু আমাকে এইচ এস সি পরীক্ষা দিতে চাপ দিলো।  ৬ মাস আমাকে একনাগাড়ে পড়ার টেবিল থেকে উঠতে দেয়নি। যাক বৃষ্টির আব্বুর কষ্ট বা চেষ্টা সফল হলো। আমি ২য় বিভাগে এইচ এস সি পাশ করলাম।

এরপরের বছর আমার গর্ভে আসলো ২য় সন্তান । সবাই বলল আল্লাহর কাছে ছেলে সন্তান চাও। আমি আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করেছি,” হে আল্লাহ তুমি যদি আমাকে সুসন্তান দিতে পারো তবে আমাকে ছেলে সন্তান দিও, আর যদি ভালো সন্তান আমার নসিবে না থাকে তবে আমাকে ছেলে সন্তান দিও না। এর পর অনেক গুলো বছর কেটে গেছে। এখন ধীরে ধীরে বার্ধক্য এসে ভর করছে।  সন্তানদের সাথে জড়ানো স্মৃতি এখনো হৃদয়ের মনিকোঠায় স্থান করে আছে। 

ফেসবুক কমেন্টস

Reactions

0
0
0
0
0
0
Already reacted for this post.

প্রতিক্রিয়া