অন্যান্য নবীদের মতো আল কোরআন এ ঈসা (আ:) কেও “আল্লাহ্র বার্তাবাহক”, নামে ডাকা হয়েছে। অলৌকিক জন্মগ্রহণের কারণে অন্যান্য নবী থেকে ঈসা (আ:) ব্যতিক্রম। ঈসা (আ:) এর জন্মকে কুরআনে ইতিহাসের প্রথম মানব আদমের সৃষ্টি প্রক্রিয়ার সাথে তুলনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে ঈসার প্রতিকৃতি আদমের প্রতিকৃতির মতো ছিল। খ্রিস্টধর্মে বর্ণিত যীশুর জন্ম কাহিনী থেকে ইসলামের বর্ণিত ঈসার জন্ম কাহিনী ভিন্ন। কুরআনের বাণী অনুযায়ী ঈসা (আ:) এর জন্ম দেন বিবি মরিয়ম, মরুভূমিতে একটি বৃক্ষের ছায়ায় অনেক কষ্ট স্বীকার করে। ঈসার ক্রুশবিদ্ধকরণের ব্যাপারে বাইবেল এ যা বর্ণনা করা হয়েছিল তা কোরআন থেকে ভিন্ন। বাইবেল এ বলা হয়েছিল ঈসা (আ:) ক্রুশবিদ্ধ হয়েছে, কিন্তু কোরআন এ বলা হয় যে, যখন তাকে ক্রুশবিদ্ধ করার জন্যে বাহক ঘরে প্রবেশ করে তখনই আল্লাহ ঈসা (আ:) কে উপরে তুলে নেন এবং আল্লাহর ইচ্ছায় বাহকের চেহারা ঈসা-এর চেহারার অনুরুপ হয়ে যায়। ঈসা কে মহান আল্লাহ মারা যাওয়ার আগেই স্বর্গ বা জান্নাতে তুলে নিয়ে যান অর্থাৎ তিনি আরোহণ করেন স্বর্গে। জীবিত অবস্থায় আকাশে বিরাজ করছেন আল্লাহর নবী ঈসা (আ:) এবং তিনি আবির্ভূত হবেন শেষ বিচারের দিনের আগে।
কুরআনে ঈসা (আ:) এর জন্মকে অলৌকিক বলা হলেও তার দেবত্ব বা “ঈশ্বরের পুত্রসন্তান” জাতীয় বৈশিষ্ট্য সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। যদিও খ্রিস্টানদের ধর্মগ্রন্থ বাইবেলে ঈসা (আ:) কে ঈশ্বরের পুত্র সন্তান হিসেবে লেখা হয়েছে কিন্তু ইসলামে আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে স্রষ্টা মনে করা একটি গুরুতর পাপ যার নাম শিরক(আল্লাহর সাথে কাউকে সমতুল্য মনে করা)।ঈসা (আ:) কে আল কুরআনে মরিয়ম এর পুত্র হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। অপখ্রিস্টের” (দাজ্জালের) আবির্ভাব ও এ সংক্রান্ত অভ্যুত্থানে ঈসা (আ:) এর ভূমিকা নিয়ে অনেক হাদিস আছে। কুরআনে বর্ণিত রয়েছে দাজ্জালের আবির্ভাবের পরে নবী মুহাম্মদের একজন উম্মত অনুসারী হিসেবে পৃথিবীতে অবতরণ করবেন ঈসা এবং দাজ্জালকে হত্যা করবেন। তিনি তারপর আরও ৪৫ বছর দুনিয়ায় বেঁচে থাকবেন। তিনি পৃথিবীতে সুশাসন ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করবেন এবং সমস্ত পৃথিবীর শাসনভার গ্রহণ করবেন। সবশেষে মহান আল্লাহর আদেশে তিনি মৃত্যুবরণ করবেন। হযরত মুহাম্মদ (সা:) কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হবে। এই কারণে মদীনায় নবী মুহাম্মদ এর কবরের পাশে তাকে কবর দেয়ার জায়গা প্রস্তুত করে রাখা হয়েছিল যা এখনও বহাল আছে।