বাংলাদেশের আরিফ আনোয়ার-যিনি ইংরেজিতে লিখে চলেছেন বাংলার জীবনকথাঃ
তাঁর নামটা নজরে আসে খবরের কাগজ খুলতেই। এমন নয় যে জেনেবুঝেই খুলেছি। পত্রিকা হাতে নিয়ে আলগোছে ক-পাতা উলটাতেই তাঁর নামটাই আগে চোখে পড়লো। হেডিং টা ছিলো আরিফ আনোয়ারের ঝড়। পুরোটা পড়ে ফেললাম গোগ্রাসে। একজন বই পড়ুয়া বা বই পোকা সম্পর্কে কিছুটা অবগত হলাম। জানলাম ১৯৭৭ সালে ১ জানুয়ারি বাংলাদেশের, চট্টগ্রামের(Chattagram) কোলে জন্ম নেওয়া এক বই প্রেমির কথা।
ধীরে ধীরে আরিফ আনোয়ারের বই প্রীতি বাড়ে বই কমেনা। ১৯৯৪ সালের দিকে সেটা আরো ভালো রকম বেড়ে যায়। ঢাকার শ্যামলীর ১ নম্বর রোড়ের বাসায় বাবা মা প্রায় বলতেন তাকে বাইরের পৃথিবীটা দেখতে,আলো বাতাস গায়ে লাগিয়ে খেলতে। কিন্তু আরিফুল মজেছিলেন বই প্রেমে।
পড়ালেখার জন্য ১৯৯৬ সালে আরিফ পাড়ি দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে । স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষে দেশে ফিরে ২০০৩ এ ব্র্যাকের শিক্ষা কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন। এরপর ২০০৭ সালে আবার কানাডায় যাত্রা উচ্চশিক্ষার জন্য। সেখানে ইউনিভার্সিটি অব টরেন্টো থেকে ২০১২ সালে পি এইচ ডি অর্জন করেন। সেখানেই জমে বসেন এবং শুরু হয় লেখক হওয়ার লরাই।
ও লেভেল পড়ুয়া আরিফ আনয়ার কে আকর্ষন করেছিলো কাজী আনয়ার হোসেনের মাসুদ রানা। গল্পের প্রতি পাতায় “তারপর কি হলো” নামে যে আকর্ষোন থাকে তা আরিফ আনোয়ার কে আটকে রাখত বইএর পাতায়।
বাংলাদেশের এই লেখকের বই “দ্য স্টর্ম” ( The Storm ) প্রকাশিত হয়েছে এবছর। এখানে বর্নিত হয়েছে ১৯৭০ এ বাংলাদেশের ভোলা জেলায় আঘাত করা ঘূর্নিঝড়ের কথা। বইটি ইতিমধ্যেই অনুবাদ করা হয়েছে তুরকি,জার্মান ও ইতালিয়ান ভাষায়। বইটিতে আছে বাংলাদেশের সেই প্রাকৃতিক দূর্যোগের সাথে যুদ্ধ করা ভোলার জেলেনি হনূফার কথা। আর সে সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাস করা শওকত চৌধুরীর কথা।
তাঁর জন্মস্থান বাংলাদেশের চট্টগ্রামে, থাকেন কানাডায়, আর তাঁর শশুর বাড়ি চীনে। ২০১৫ সালে তিনি বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন চীনা তরুনী সান্দা এর সাথে। তাদের ৯ মাস বয়সি ছেলের নাম কিরন।
তিনি লিখেছেন” “দ্যা স্টর্ম” । এই লেখক ভবিষ্যতের উপন্যাসের জন্য বেছে নিয়েছেন নতুন প্রেক্ষাপট। আরিফ আনোয়ারের মতে ইংরেজি ভাষাটা শুষ্ক। বাংলার সাহিত্য যে ভাব-রস দ্বারা পূর্ণ তা ইংরেজিতেই ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন তিনি।
তিনি এবং পরবর্তিতে অনেকেই যত চেষ্টা করবেন তত বাংলাদেশের গল্প পৌছে যাবে বিশ্বদরবারে। তাঁর লেখায়/তাদের লেখায় ফুটে উঠবে বাঙ্গলার রুপ-লাবণ্য,ইতিহাস , ঐতিহ্য।
বিশ্বসাহিত্যে উঠুক আরিফ আনোয়ারদের সাহিত্যের ঝড়।
তথ্য সূত্রঃ