আমাদের জীবনে রঙ্গমঞ্চে সুখ,দুঃখ সর্বদা পাশাপাশি চলে।দুটোই৷মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ।জীবনটা যদিওবা ক্ষনিকের,আমাদের স্বপ্ন অসীম।ঠিক যেন ডানা ভাঙা পাখি,পারি দিতে চাই মহা বিশ্ব।
শুরুটা ছিল হঠাৎ করেই।পৃথিবীর আকাশ যে খুব শীঘ্রই কালো মেঘে ঢেকে যাবে আমরা কেউ হয়তো স্বপ্নেও ভাবিনি।ভাবা তো দূরের কথা এ যে আমাদের কল্পলোকের কল্পনাকেও হার মানায়।চিনের উহান থেকে শুরুটা হয়েছিল।
চীনের ল্যাব থেকে নাকি তাদের বাজার থেকে এ রোগের উৎপত্তি তা নিয়ে তত্ত্ব,তথ্য,উপাত্তের যেন শত শত ঢেউ আছড়ে পড়েছে বিশ্বে।
আমরা সবাই হয়তো ধরেই নিয়েছিলাম চীন থেকে শুরু হয়ে চীনেই এ-র সমাধি হবে।কেটে গেলো ২০১৯ এ-র ২৯ এ ডিসেম্বর এর পর আরও কিছু দিন।পৃথিবী নিজ স্বপ্নে বিভোর।
হাজারো স্বপ্ন বাকি,কেউ নতুন চাকরির স্বপ্নে চোখে ঘুরছে,কারো চোখে সাফল্যের আশা,কারো আশা নতুন মানুষের সাথে নতুন জীবন শুরুর।রাস্তায় তখনও মানুষ মুক্ত মনে ঘুরছে,আন্দোলন চলছে,অনুষ্ঠান,রীতি নীতি নিয়ম মেনে চলছে।আর এ-র মাঝেই নীরবে নিভৃতে কোভিড-১৯ জায়গা করে নিচ্ছিল আমাদের ফুসফুসের ঠিক কেন্দ্রে।আতি আশাবাদীদের আশা তখনওত তুঙ্গে।নাহ,আমাদের পীর আওলিয়ার দেশে করোনা হবে না।ওরা বিধর্মী , তাই ওদের ওসব হয়ে।এসব বলতে বলতেই ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হলো।সে সময় থেকে সর্বোচ্চ সতর্কতায় গেলে হয়তো করেনা ঝড় অনেকটাই আটকে যেত।
কিন্তু তখনো আমাদের পালন করবার অনেক কিছুই ছিল।ততোদিনে দেশে দেশে লকডাউন শব্দটা বেশ পরিচিত হয়ে উঠেছে।আমেরিকা,যুক্তরাষ্ট্র সম্পূর্ণ কঠোর লকডাউনে চলে গেল।সম্পূর্ণ নতুন পরিস্থিত। দেশে দেশে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতু্য, বাড়ছে আক্রান্ত।লকডাউন জারি করে সব দেশের সরকার এটাও জানিয়ে দিল সতি্যকারের প্রয়োজন ছাড়া আর ঘরের বাইরে নয়।করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধটাই এমন।লড়তে হবে ঘরে থেকে,খেয়ে দেয়ে সুস্থ থেকে।তবে এটাও ঠিক,পেটের আর পিঠের দায় পরলে আপনাকে বাইরে যেতে হবে।
বাংলাদেশেও লকডাউন হবে হবে করছিল।কিন্তু যা হলো তা বেশ অদ্ভুত।লকডাউনের খালাতো ভাই হিসেবে দেশে সাধারণ ছুটির যাত্রা শুরু হলো,আর বাংলাদেশের মানুষ যেন হঠাৎই উৎসব আনন্দে মেতে উঠল।এ যেন ঈদের ছুটি ২২ মার্চ থেকে আমরা অনেকেই এই সাধারণ ছুটিকে নিজ স্বার্থে লকডাউন হিসেবে ধরে নিয়ে চলে গেলাম শীত নিদ্রায়।মাঝে মাঝে খাবারের জন্য শুধু বের হওয়া।অনেকেই মানতে শুরু করলো সামাজিক দুরুত্ব।কিছুদিন জনমনে আতঙ্ক ছিল।অনেকে এখনও আতঙ্কে।তবে করোনা আতঙ্ক বীর বাঙালীকে বেশি দিন আর দমিয়ে রাখতে পারলো না। এক্ষেত্রে প্রজ্ঞায় মেধায় বয়সে বড়রাই যেন এক কাঠি সরেস।ঠুনকো কাজকে প্রয়োজনের সজ্জায় সজ্জায়িত করে তারা নিজেদের পরিবারের সাথে সাথে তাদের অনুসরণ করা একটা অংশকেও বিপথে চালনা শুরু করল।
ঘরের ভেতর বাবার সাথে ঝগড়া বেড়ে গেল।তাকে করোনা যুদ্ধের সূক্ষ্-কৌশলগুলোর ধারণা দিতা গিয়ে।লকডাউন তথা সাধারণ ছুটির ৪০তম দিনে গিয়ে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়ে উঠলো।মসজিদে নামাজ পড়া বাতিল হলো।গন জামায়েতে আড্ডা,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আগে থেকেই বন্ধ।সময়ের সাথে সাথে মানুষ নিজেকে বদলে নিচ্ছে এক অন্য জীবনে।এখন আর কলেজের প্রাঙ্গনে বন্ধু আড্ডা বসে না।সামনে আরও অনেকগুলা বছর হয়তো এই অন্য সাধারণ জীবনে আমাদের মানিয়ে নিতে হবে।এরই মধ্যে ১২ মে স্বপরিবারে, বাড়িতে আগমন ।বাড়ছে খরচ।করেনা শুধু সাস্থ ব্যবস্থা নয়,ধংস করছে আর্থনৈতিক ব্যবস্থাকেও।
আমাদের সাথে সেচ্ছায় এসেছিল হিমেল।এরকম একদিন হয়তো অনেককেই গ্রামে ফিরতে হবে।
গ্রামে বাবা,চাচা বড় ভাইদের এখন কোনটা প্রয়োজন আর কোনটা আমাদের অজুহাত সেটা বেঝাতে গিয়ে রীতিমত দৈনন্দিন নিয়ম করে ঝগড়া হয়।তারা হয়তো ভাবছেন তাদের কুঠি বাড়িতে করেনার আগমণ ঘটবে না।সেটা, ভুলের মাশুল দেওয়া অসংখ্য পরিবার ভেবেছিল।তারা নিজেদের নির্ভিক ভাবছে যেখানে সত্যটা হলো,অবুঝ শিশু কে আগুনের ভয় দেখানো যায়না ।বর্তমানে বিশ্বে করোনার মৃতু্্য ৩ লক্ষ্য ৫০ হাজার অতিক্রম করেছে।
#মৃতু্য একটি সুনিশ্চিত সত্য।প্রতিটি দিন ঘন্টা মিনিট সেকেন্ড মৃতু্য আমাদের সাথেই আছে।তবু্ও প্রতিনিয়ত আমরা আগামির স্বপ্ন দেখি।এটা যেনেও যে আমাদের বর্তমান অনিশ্চিত । এটাই মানব জীবন।তবে তার মানে কি এই,আপনি মৃতু্য কে আলিংগন করবেন!!
বর্তমান মহামারীতে বিশ্বের তাবদ দেশ নাজুক অবস্থায়।তবুও জীবীকার তাগিদে সব দেশে লকডাউন শীথিল হচ্ছে।এই শীথিল হওয়ার অর্থ হচ্ছে নিগুড় প্রয়োজনে যা কিছু করেন কিন্তু প্রয়োজনের বাহানা দিয়ে অপ্রয়োজনীয় কাজ করে নীরব ঘাতক হয়ে উঠবেন না।এই পরিস্থিতিতে আমাদের বাস্তব চিত্র টা কি??
১/একদল আছেন যেখানে পরিবারের বড় এবং ছোটরা সম্মলিত ভাবে সচেতন।প্রয়োজন(জীবিকা,খাদ্য,চি
স্যালুট আপনাদের।
২।তবে যারা করোনা থেকে বিচ্ছিন্ন হতে গিয়ে সামাজরা পরিবারের অতি প্রয়োজোন,চিকিৎসা,জীবিকা,খাদ্
৩/এবার আসা যাগ মোক্ষম জায়গায়।একদল আছেন যেখানে পরিবারের বয়স্করা সচেতন।তুলনামূলক কম বয়সীরা অহেতুক সাহস দেখাচ্ছে।তারা নিরবে পরিবারের বয়স্কদে, সমাজের মানুষের নীরব ঘাতকে পরিনত হওয়ার ঝুকি শুধু বাড়াচ্ছেন।প্রয়োজনের বাহানায় অপ্রয়োজনে তারা বেড়িয়ে পড়ছেন মানছে না বয়স্কদের বারন।
৪/ এখানে আছেন তারাই যারা বিজ্ঞ ,বয়স্ক, প্রবীন।এনাদের পরিবারের ছোটরা আবার সচেতন।কিন্তু এই ক্ষেত্রে প্রয়োজনের বাহানায় অপ্রয়োজনীয় সামাজিকতায় মেতেছেন।আমার কথায় বা লিখায় তারা কষ্ট পেলে আমি দুঃখিত, বোঝানোর জন্য।কারন যেখানে মিষ্টি কথা অসাড় ,সেখানে উগ্রতা শ্রেয়। এটা সত্য তারা জীবনে আমাদের চেয়ে বেশি দেখেছেন,আমাদেরকে চালানোর দায়িত্ব তাদের।তাই বলে তাদের ভুল পথটাও জোর করে বললেই সঠিক হতে পারে না।তারা সামাজিকতায় নামে অপ্রয়োজনীয় আড্ডা,বাইরে যাওয়া চালিয়ে যেতে পারেন না।ঠিক সেভাবে তরুণ রাও না।প্রবীনরা চাইলে ধর্মের বাহানা দিয়ে চলতে পারে না মৃতু্য আসবে, আমি বাইরে যাবোই।হ্যা,বাইরে যান,কথা বলেন,তবে সতি্যকার প্রয়োজনে।কোথাও একজন বাইরে ঘুরে,সাধারণ ছুটি শেষ,আল্লাহ ভরসা বলে আপনি নিজেকে ও দেশেকে ঝুকির মুখে ফেলে দিতে পারবেন৷ ন।আপনি বয়সে বড় বলেই আপনি যা ভাববেন তাই সঠিক হতে বাধ্য নয়।কেউ আপনাকে সম্মান করে ঘর বা বাড়িতে কথা বলতে আসলে আপনাকে এড়িয়া যেতে হবে অতি প্রয়োজন না হলে।সামাজিকতা, বিশ্বাস,পারিবারিক ঐতিহ্য মিথ্যা দম্ভ দেখাবেন না দয়া করে কারণ মৃতু্য জাত,বর্ণ,ঐতিহ্য মানেনা।প্রয়োজনের বাহিরে গিয়ে দম্ভ দেখাবেন না।জীবন দিয়ে এর মাশুল দিবে আপনারি পরিবার বা অন্য কারো।খুনি কিন্তু আপনি।
আরেক দল আছে সমাজের সে সব লোক যারা আসলেই কম জানেন বা যাদের আসলেই নিম্ন জীবন যাপনের কারণে নিয়ম মানার উপায় নেই।তাদের বেশি দোষ দিয়ে লাভ নেই।
বাস্তবতা এই যে,১ নম্বরে যারা আছেন তারা যুদ্ধ টা করেছেন এবং করেও যাবেন।
২ এ থাকা যোদ্ধারা অনেকটা নিষ্প্রিয় যোদ্ধা তবে ৩,৪ এর থেকে তারাই সমাজের জন্য বেশি মংগলজনক।আর ৩ ও ৪ এ থাকা ব্যাক্তিরা,তরুণ ও প্রবীণরা সমাজের সচেতনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছেন।তারা নীরবে দেশ ও দেশের মানুষের ঘাতক হয়ে উঠছেন।
৫ নম্বরের ব্যাক্তিরা শিক্ষা বঞ্চিরা।তারা আসলেই কম জানেন এবং এরা ১ নয় বরং ৩ ও ৪ এর মিথ্যা আশার বাণী দ্বারা উজ্জীবি। ৩ ও ৪ এ থাকা অতি সাহসী তরুন ও কিছু কূপমন্ডুক প্রবীণদের৷ হয়তো বেঁধে রাখা যাবে না,কিন্তু তাদের ছলে,বলে,কৌশলে না হলে উগ্রতা দিয়ে বোঝাতে হবে।তাদের সরাসরি বলতে হবে তারা দেশের শত্রু।লিখতে গিয়ে বা মুখের ওপর বলতে গিয়ে ব্যাক্তিগত রাগ অভিশাপ অভিমান বা ক্ষোভের৷ স্বীকার হলেও তাদের বলতে হবে।এটা এমন বিষয় নয় যেখানে তরুণের অন্যায় আবদার বয়স কম বলে মেনে নিবেন বা বড়দের কথা থাক বড়রা যা বলে বলপ ছেড়ে দিবেন।অন্তরে মমতা থাকলেও এখন সময় খোলশটার শক্ত করার।এই শক্ত খোলস আপনার মৃতু্যকে বা আমার মৃতু্যকে কখনোই ঠেকাতে পারবে না।তবুও নিজের পরিবারে দেশের জন্য সামান্যতম উপকার করতে কঠোর পথ আপনাকে বেছে নিতেই হবে।কারো মৃতু্যই কেউ ঠেকাতে পারে না,তাই বলে আত্মহনন কখনো বৈধতা পেতে পারে না।আর আপনি একা তো মরছেননা,দশজনকে খুন৷ করে আশেপাশের দশ জনের হাতে তুলে দিচ্ছেন নীরব মরণাস্ত্র।
সময় হয়েছে বদলে যাওয়ার।বদলে যাওয়া শুরু করা সময় টা কখনেই শেষ হয় না।তবে যত দ্রুত ততো ভালো।
# সামনে অনিশ্চিত জীব, অনিশ্চিত ভবিষ্যত।
সাহসে ভর করে আমাদের এগুতে হবে।নিজেদের প্রয়োজনে নিজেদের ইচ্ছার বিরুধে্্য আমাদের বেঁধে রাখতে হবে।সচেতন থেকেই আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে এগুতে হবে।সেচ্ছায় আত্তহনন করতে বিল্ডিঙ থেকে ঝাপ দিয়ে মাঝ পথে আল্লাহ কে স্মরণ না করাই শ্রেয় ।তাই এখন থেকে আমাদেরকে বাছাই করতে শিখতে হবে প্রয়োজন-অপ্রয়োজন,দরকার-বেদরকা
সকলের ও নিজের জন্য আল্লাহ প্রদত্ত হেদায়েত নেমে আসুক কালো আধারের বুক চিরে।পৃথিবী ভেসে যাক আলোয় আলোয়।