বৃষ্টির বিয়ে হয় মিজানুর রহমান জাবেদের সাথে। বৃষ্টির কোলজুড়ে আসলো বৃষ্টির মতই আরেকটি মিষ্টি মেয়ে, আমার নয়নের মনি জানিতা জান্নাত জুভিরিয়া। জুভিরিয়াকে পেয়ে দাদা-দাদী, নানা-নানী, মামার আনন্দের শেষ নেই। এরপর আরেকজন মিষ্টি মেয়ে জুনাইরা পৃথিবীতে আসলো। এরপর আরেকটি ছোট্ট,দুষ্ট, চাকমা মেয়ে আসল-নাম জিয়ারা, আমি ডাকি জিয়ারা বুড়ি।
জুনাইদের জন্মের তিন বছর পর বৃষ্টির আব্বার চাপে বি,এ পরীক্ষা দিতে হলো। আল্লাহর রহমতে বৃষ্টির আব্বুর চেষ্টায় ব,এ ২য় বিভাগ পেয়ে পাশ করি।
বৃষ্টি ছোট বেলায় ছিলো খুব চঞ্চল উচ্ছল। চঞ্চলতার জন্য আমার মেয়েকে অনেক মেরেছি। সেই কথা মনে হলে আমার এখন কান্না পায়। কারন ঐ সময় মাথায় আসতোনা মেয়েটার বিয়ে হবে আমার কাছ থেকে দূরে চলে যাবে। আমার মেয়ে চট্টগ্রামের শহরের বিবিরহাট এলাকার আমিরুন্নেছা প্রাইমারী এন্ড কেজি স্কুলে পড়ত। প্রত্যেক ক্লাসে রোল এক বা দুই থাকত। বৃষ্টি যখন চতুর্থ শ্রেনীতে পড়ে তখপ্ন ঐ স্কুলের শাহানা ম্যাম জিজ্ঞেস করেছিলেন – আপা আপনার মেয়েকে কে পড়ায়? উনি বলেছিলেন দেখবেন আপনার মেয়ে ইংলিশে খুব ভালো করবে। বলা বাহুল্য আমি নিজেও ঐ স্কুলের শিক্ষিকা ছিলাম। বৃষ্টি ষষ্ঠ শ্রেনীতে নাসিরাবাদ গার্লস স্কুলে টিকে। এরপর ও অষ্টম শ্রেনীতে পড়া অবস্থায় আমরা গ্রামের স্কুলে চলে যাই। এস,এস,সি পরীক্ষায় এ গ্রেড পাওয়ার পর কোথায় পড়বে সেটা নিয়ে বৃষ্টির আব্বুর সাথে কথা হচ্ছিলো। বৃষ্টির আব্বু টার্গেট দিলো ইস্পাহানী কলেজে টিকলে তারপর শহরে থাকতে যাবে। অবশেষে আমার মেয়ে গ্রামের স্কুল থেকে এস,এস,সি পাশ করে কোন ধরনের কোচিং ছাড়াই ইস্পাহানী পাব্লিক স্কুল এন্ড কলেজে ভর্তি হয়।
ঠিক ঐ সময়টায় জুনাইদের গ্রামের স্কুলে ৫ম শ্রেনীর ফাইনাল পরীক্ষা শেষ। আমাদের চেষ্টা ছিলো শহরের সরকারী স্কুলে তাঁকে ভর্তি করানোর। আল্লাহর রহমতে আমার ছেলেও গ্রাম থেকে এসে কোন ধরনের কোচিং না করেই নাসিরাবাদ স্কুলে ভর্তি পরীক্ষায় টিকে যায়। সেকি আনন্দ আমাদের। জুনাইদ কে বলেছিলাম-সরকারী স্কুলে না টিকলে তোকে মেরে ফেলবো।