বিদায়ের বেদনাঃ
::
ছোট থাকতে কতবার যে মাকে জড়িয়ে ধরেছি সেটার কোন হিসেব নেই, দিনে মা যখন আমাকে ঘুম পারিয়ে চলে যেত রান্নাঘরে, তখন ঘুম থেকে উঠে দেখতাম মা নেই, তারপর অনেক খুঁজাখুঁজির পর দেখা পেলেই দৌড়ে গিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরতাম,তখন কাজ থাকা সত্ত্বেও মা আমাকে কোলে নিত। আর এখন বড় হয়ে যাওয়ায় মাকে আর জড়িয়ে ধরা হয়ে উঠেনি।
::
কিন্তু আজ অনেক বছর পর আমি মাকে জড়িয়ে ধরেছি। তবে এমনি এমনি ধরেনি আজ আমি স্টুডেন্টস ভিসা নিয়ে আমেরিকা চলে যাচ্ছি, তা নাহলে হয়তো সেটাও হয়ে উঠতোনা। মাও আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগল। আরো অনেকেই কাঁদতেছে তবে আমি যাদের সাথে বেশি দুষ্টামি করতাম তারাই বেশি কাঁদতেছে। তারপর সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গাড়িতে উঠলাম, কিছুক্ষন যেতে না যেতেই মায়ের ফোন বাবা কোথায় আছিস? (আমি বাসা থেকে বের হলেই একের পর এক ফোন দেওয়াটা মায়ের সেটা অভ্যাসগত)
::
এইতো মা এয়ারপোর্টের কাছাকাছি এসে পড়েছি। বাবা তোই চলে গেছিস আর বাড়িটা কেমন ফাকা হয়ে গেছে, আর শুন ঠিককমতো খাওয়াদাওয়া করিস অনিয়ম করিসনা কিন্তু। পৌছেই ফোন দিস । আমার খুব কষ্ট হচ্ছেরে। কাঁদোকাঁদো সুরে কথা গুলো বলল মা। আমি বললাম প্লিজ মা তুমি চিন্তা করোনা।
::
এভাবে চিন্তা করলে তো তুমি অসুস্থ হয়ে পড়বে। মা প্লিজ তুমি চিন্তা করোনা আমি খুব ভালো থাকবো আর আমি ঐখানে পৌছেই ফোন দিবো। এখন রাখি। কথাগুলো বলেই প্রাইভেট-কারের লুকিং গ্লাসে তাকিয়ে দেখলাম চোখ দুটি দিয়ে জল উপচে পড়ার উপক্রম,এবং একখানি ফোটা গড়িয়েও পড়েছে তাই টিস্যু দিয়ে মুছে নিলাম।
“মা”
ফেসবুক কমেন্টস