ইসলামী জীবনের গল্প: বদরের প্রন্তরে

Please log in or register to like posts.
পোস্ট

১৭ রমজান । ইসলামের ইতিহাসের প্রথম যুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার ঐতিহাসিক দিন। ইতিহাসে যা ‘বদরের যুদ্ধ’ নামে পরিচিত।

 

বদর প্রান্তরে সংঘটিত এই সম্মুখ সমর ছিল বাতিল শক্তির বিরুদ্ধে সত্যের শক্তির বীরত্ব গাঁথা।সে সময়ের পরিস্থিতি ছিল এ রকম : সবে মাত্র এ বছর থেকেই একমাস রোজা রাখবার বিধান ফরজ হয়। আর এর মধ্যেই মক্কার অবিশ্বাসীরা মুহাম্মদ (স.)-এর ওপর বদরের যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়।

 

বদর ছিল মদীনা থেকে ষাট মাইল পূর্ব-দক্ষিণে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্র । তখনকার দিনে এখানে পানির প্রাচুর্য থাকায় স্থানটির গুরুত্ব ছিল অত্যাধিক। ফলে এই যুদ্ধটি ছিল ইসলামেরই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিজয়।

 

তখন রোজা অবস্থায় রাসূল (স.) তাঁর ৩১৩ জন সাহাবী নিয়ে বদরের প্রান্তরে হাজির হন। অন্যদিকে  হাজার যোদ্ধা নিয়ে সেখানে উপস্থিত হয় অবিশ্বাসীদের সরদার আবু জাহেল । ওই রাতেই আল্লাহ পাক রহমতের বৃষ্টি বর্ষণ করেন। বৃষ্টি কাফেরদের ওপর মুষলধারায় বর্ষিত হয়। যার কারণে তাদের অগ্রগমনে বাধার সৃষ্টি হয়।

 

পক্ষান্তরে মুসলমানদের ওপর বর্ষিত হয় হালকা বৃষ্টি, যা ছিল আল্লাহর রহমত স্বরূপ। ফলে মুসলমানগণ পাক-পবিত্র হওয়ার সুযোগ পেলেন, তাদের পদতলের বালুকা শক্ত হলো এবং প্রস্তুত হলো পা রাখার মতো অনুকূল পরিবেশের । তাদের মনেও দৃঢ়তা এল। রাসূল (স.) তাঁর সাহাবীদের নিয়ে অবিশ্বাসীদের আগেই বদরের তালাব বা জলাশয়ের কাছে পৌঁছে গেলেন এবং জলাশয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিলেন (আর রাহিকুল মাখতুম, সিরাতে ইবনে হিশাম)।

 

৩১৩ জন পদাতিক মুসলমানের দল তৎকালীন রণকৌশলে পারদর্শী অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত কাফের বাহিনীর সঙ্গে অসম যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে ইসলামের বিজয় ছিনিয়ে আনে।

 

এদিকে মুসলমানদের বিজয়ের পর রাসূল (স.) মদীনার লোকদের কাছে এই সুখবর জানানোর জন্য আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা, জায়েদ বিন হারেছাকে (রা.) দূত করে পাঠালেন। মদীনার মুসলমানগণ বিজয়ের খবর শুনে আনন্দে মেতে ওঠেন। আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে মদীনার আকাশ-বাতাস মুখরিত হয়ে ওঠে।

 

এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘বদরের যুদ্ধে যখন তোমরা হীনবল ছিলে, আল্লাহ তো তোমাদের সাহায্য করেছিলেন। সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো।’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১২৩)

 

ইসলামের প্রসার ও প্রচারে বদর যুদ্ধ অন্যতম এক মাইলফলক হিসাবে বিবেচিত হয়ে আসছে।এই যুদ্ধে স্বল্পসংখ্যক মুসলমান জানবাজি রেখে কাফেরদের মোকাবিলায় জয়লাভ করেছিলেন। বদর যুদ্ধে ৭০ জন কাফের নিহত ও ৭০ জন বন্দী হয়। অন্যদিকে মাত্র ১৪ জন মুসলিম বীর সেনা শহীদ হন; কাফেরদের বহু অস্ত্র ও রসদপত্র মুসলমানদের হস্তগত হয়।

 

এতে রোজাদার সাহাবিরা যেভাবে কৃতিত্বের সঙ্গে সফলকাম হয়েছেন, জগতের ইতিহাসে তার তুলনা নেই। এই সাফল্যের অপূর্ব বিজয়গাঁথা ইসলামের ত্যাগের শিক্ষায় সত্য ও ন্যায়ের পথে মুসলমানদের যুগ যুগ ধরে প্রাণশক্তি জুগিয়ে আসছে।

ফেসবুক কমেন্টস

Reactions

0
0
0
0
0
0
Already reacted for this post.

প্রতিক্রিয়া