আমার জীবন: ফেলে আসা শৈশব ,কৈশোর

Please log in or register to like posts.
পোস্ট
Imrul_kayes_sakib, amarjiboni

আমার জীবন: ফেলে আসা শৈশব ,কৈশোর

আমার শিশুকাল বা  শৈশব কেটেছে গ্রাম।  বলতে গেলে আমার শৈশবের একটা অংশ যদি গ্রামে কাটে তাহলে,অপর অংশের বেশিভাগ  কেটেছে  শহরে। আমার শৈশব এর প্রথম স্কুল ছিল গ্রামে। স্কুলটার নাম ছিল বেগম নূরনাহার প্রাথমিক বিদ্যালয়। পড়ালেখা খুব একটা করতাম না,  অনেক ফাঁকি বাজ ছিলাম, যার জন্য বাড়ি তে স্যার রাখে আমি আর আমার বড় আপুর জন্য। আপু আবার সে সময় ক্লাস সেভেন এ ছিলেন। আপুর সাথে আমার সব সময় ঝগড়া হতো,  এর বেশির ভাগ দোষ কিন্তু আপুর ছিলো, কারণ আমি সে সময় অনেক ছোট ছিলাম তেমন কিছু বুঝতাম না। একটা জিনিস বুঝতাম আমাকে বলে দিতে হবে, কিছু হলে সোজা আম্মুর কাছে। আম্মু আবার আমাকে খুব আদর করতো।  কারণ আমি দুষ্টমি কম করতাম।

পরে আমাদের দুই ভাই বোন এর জন্য লজিং স্যার রাখা হয়।  আর সেই দিন থেকে আমার পড়ার জীবন শুরু হলো। শিখতে শুরু করলাম অ,আ,ক,খ,১,২,1,2,A,B নতুন নতুন সব শব্দ।  এ ভাবে কেটে গেলো একটি বছর। ঠিক এক বছর পর স্যার শহরে চাকরি ঠিক হলে চলে গেলেন। এর পর একটু একটু বেড়ে উঠা, যদিও পড়ালেখার ব্যাপার এ ফাঁকি বাজ ছিলাম কিন্তু অন্য দিক  দিয়ে সবার প্রিয় ছিলাম। কারণ দুষ্টামি খুব কম করতাম এবং বড়দের কথা শুনতাম । তবে আমার একটা খারাপ অভ্যাস ছিলো আমি ছোট বেলা থেকে জংগলে খেলতে পছন্দ করতাম আর একটু সুযোগ পেলে  বাড়ির সামনে জংগলে ঢুকে পরতাম। আমার যতটুকু মনে আছে সেই সময় আমাদের বাড়ির সামনে হলুদ বাগান ছিলো, আমি আম্মুকে এই একটা দিক দিয়ে খুব জ্বালাতাম। আমাকে সব সময় খুজে পেতো না, একদিন বাড়ির পিছনে আরেক দিন সামনে বা পাশে গিয়ে নিজের আনন্দে  খেলতাম, কিন্তু সন্ধ্যা হলে আমাকে নিয়ে সবার চিন্তা সবাই আমাকে খুঁজত , কিন্তু সহজে খুঁজে পেতো না। বাড়ির এই দিক সেইদিক পুকুর ঘাট কিছুই বাদ রাখতো না, কিন্তু আমাকে বেশির ভাগ সময় আমাদের ঘাটার সেই হলুদ বাগান এর ভিতর বা মাঝখানে খুঁজে পেতেন।

আর আম্মু আমাকে নিয়ে সব সময় চিন্তা করতেন কারন একটু সুযোগ পেলেই তো আমি হাওয়া হয়ে যেতাম। এর জন্য আম্মু অনেক সময় কান্না ও করতো এবং সব সময় এই সমস্যার কারনে আমাকে অনেক  মারতেন ও অনেক বকা ঝকা করতেন। কিন্তু কে শুনে কার কথা, আজকে মাইর খেতাম আবার রাতে ঘুমের সাথে ভুলে যেতাম , পরের দিন গুলো ও এই ভাবে কাটতো। আমি আবার বাড়ির বাইরে তেমন যেতাম না, তবে একটা কথা খুব মনে পড়ে যখন একটু বড় হই তখন আম্মু আমাকে দুপুরে ঘুমপাড়াত কারন যাতে করে বাইরে না যাই। কিন্তু আমি ঘুম এর ভান ধরতাম আর উল্টো আম্মু কে ঘুমপাড়াই দিয়ে চলে যেতাম সামনের বাড়িতে খেলতে। আর বাড়িতে আসার পর তো মাইর একটা ও মাটিতে পড়তো না।  আম্মু আবার মারে না-মারে না, মারলে আবার একদম ছাড়ে ও না। আমাকে ছাড়া আবার খেলা হতো না সেই সময় কারন আমার কাছে ব্যাট ছিলো। আর অন্যদের যেসব ব্যাট ছিলো তা গ্রামের কাঠ দিয়ে বানানো। আমার ব্যাট টা আমার মেজো ভাইয়া এনেছিল । সে সময় নাকি মেজো ভাইয়া জাপান থেকে আসছিলো যতটুকু জানি। কিন্তু সব থেকে মজার ব্যাপার আমি ভাইয়া কে চিনতাম ও না। কিন্তু আমি সেই সময় খেলাধুলা কম করতাম। সে সময় থেকে আমার সপ্ন ছিলো একজন ক্রিকেটার হওয়ার। কিন্তু সব কিছু সবার জন্য আসে না এক সময় খুব ভালো ক্রিকেট ও খেলতাম, কিন্তু স্বপ্নই স্বপ্নই থেকে যায়।

এবার আস্তে আস্তে স্কুল এ যেতে শুরু করলাম এবং কিছু বন্ধু ও হয়ে গেলো। আমি আবার ফার্স্ট  ব্যাঞ্চটাতে বসতে পছন্দ করতাম। আমাকে প্রথম স্কুল এ ভর্তি করায় আমার ছোট কাকা এবং স্যার দের কে আমার সামনে বলে আসছিলো আমার এখন ও মনে আছে কথা টা, “না পড়লে মাংস আপনাদের আর  আমাদের কাছে হাড্ডি গুলা পাঠাই দিবেন”। যদিও সেই সময় কথাটা অর্থ  জানতাম না, কিন্তু স্কুল এর মেডাম আমাকে কথা টা সব সময় বলতেন যে তোমার কাকা কি বলছে মনে আছে তো??? আর এই ভাবে আস্তে আস্তে বড় হয়ে উঠলাম এবং দুষ্টামিও করতে শুরু করলাম কিন্তু আমার দুষ্টামিগুলো ছিলো সবার থেকে আলাদা। কারন আমি বন্ধুদের সাথে এক রকম ছিলাম আর বড়দের অনেক সম্মান করতাম সে যাইহোক – বড়দের সামনে আমি একদম ফেরেস্তা।

এরপর অবশ্য গ্রাম থেকে শহরে চলে আসতে হয়,  কারণ একদিন আমার বড় আম্মু বাড়িতে আসেন তার কানে যায় আমি খুব দুষ্টামি করি এবং পড়া লিখা ও করছি না আর সব সময় নাকি বাইরে ঘোরাঘুরি করি।  কিন্তু সব কথা সত্যি ছিলো না, তাই আমি মনে করি আল্লাহ যা করে ভালোর জন্য করে। আর বড় আম্মু বলেন গ্রামে থাকলে আমার পড়া লিখা হবে না।  আর এখন সত্যি বুঝতে  পারছি বড় আম্মু আমাকে যদি সেই দিন টেনে না নিতো তাহলে হয়তোবা  আজ এতো টুকূ আসতে পারতাম না।

সেই সময় আমি চতুর্থ শ্রেণীতে ছিলাম। এর আগে আবার আমাকে গ্রামে তেমন একটা থাকতে দিতো না,  আমার বড় আব্বু,আর বড় আম্মু বাড়িতে আসলেই আমাকে শহরে নিয়ে যাইত  আমাকে খুব আদর ও করতেন। আবার আমি সব থেকে বেশি ভয় পেতাম আমার বড় আব্বু কে।

এবার বড় আম্মু আমার আম্মুর সাথে কথা বলে ঠিক করলেন আমাকে আর গ্রামে রাখা যাবে না,তাই আমাকে শহরে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন বড় আম্মু।  এর পর আর দেরিও হয়নি। সেই বছর শহরে আমার বাড়ির এক কাকার সাথে মেসে দেয়, আর সে থেকে আমার শহরের প্রথম জীবন শুরু। তার পর আমাকে রেলওয়ে স্কুল র্ভতি করিয়ে দেয়।আমার তেমন একটা ভালো লাগতো না।  সবাই বড় আমার থেকে। অনেক বড় কিন্তু আমাকে খুব আদর করতো সবাই। প্রথম কিছু দিন ভালোলাগলেও,  পরে খুব খারাপ লাগতো আম্মু দের জন্য, সব সময় লুকিয়ে লুকিয়ে কান্না করতাম কিন্তু কাউ কে বুঝতে দিতাম না। এই ভাবে কেটে গেলো একটি বছর আর দিন গুলা কেটেছে ঘুম আর খেলা দিয়ে কারন সবাই সবার কাজে ব্যাস্ত থাকতেন আমার সেই কাকা টা ও সারা দিন এর সব কাজ শেষ করে বাসায় আসতেন রাত ৯/১০ টার দিকে। আমাকে যে কারনে বড় আম্মু শহরে আনলেন সেটা সে সময় আর হলো না, কারণ আমি সেই স্কুলে রেজাল্ট খারাপ করি।

আর আমার স্কুলে বন্ধু ছিলো মাত্র দুই জন। সেই সময় কি করছি আর কি হচ্ছে আমি কিছুই বুঝতাম না, মনে হতো সবাই আমার ভালো চাচ্ছিলো না। এতো কিছু হওয়ায় পর ও বড় আম্মু একটু ও বকা দেয় নি,তিনি বললেন যে সাকিব পারবে সমস্যা নাই। এটা থেকে আমি নিয়ে ও মনে করতাম না আমাকে পছন্দ করে এমন এক জন তো আছে,আর সেটা হলো বড় আম্মু।  কিন্তু অন্য দিকে আমার বড় আব্বু ছিলো খুব রাগি, তিনি এক কথায় বলেন ওরে দিয়ে হবে না এবং খুব বকাঝকা করেন। আবার সেই সময় আমার দেখা শুনার সব দায়িত্ব বড়আব্বুর ছিলো। কিন্তু বড় আম্মু হাল ছাড়তে রাজি নাই,  তাই তিনি ঠিক করলেন তাদের বাসায় রেখে আমাকে পড়াবেন এবং দরকার হলে ১/২ টা ভালো স্যার ও রাখবেন। এর পর আমাকে “শাহ ওয়ালিউল্লাহ্ ইন্সটিটিউট” এ আমাকে র্ভতি পরিক্ষা দিতে হয়, কিন্তু আমি পরিক্ষায় টিকতে পারি নাই। এর পর বড় আম্মু স্যার দের সাথে চেলেঞ্জ নিয়ে আমাকে অনেক কষ্ট করে র্ভতি করান এবং আমাকে বড় আম্মু সে সময় বলেছিলো,আমার সম্মানটা রাখিস আর পড়লে মন দিয়ে পড়বি।এবং আমি বড় আম্মুর কথা রাখতে পারলাম এবং ভালো রেজাল্ট ও করতে শুরু করলাম। কিন্তু এর আগে আমাকে চতুর্থ শ্রেণীতে আমাকে দুই বছর থাকতে হয়। এর প্রথম কারণ ছিলো আমি গ্রাম থেকে শহরে এনে আমাকে চতুর্থ শ্রেণীতে আবার র্ভতি হতে হয়।  আমার জন্য সে সময় দুই জন স্যার রাখা হয় বাসায়। আমার প্রাইমারি জীবন ভালো রেজাল্ট দিয়ে শেষ হল।

শুরু হলো হাই স্কুল এর জীবন  গেলাম স্কুলে নুতুন করে ষষ্ট শ্রেণিতে র্ভতি হতে,এক বন্ধু এসে বলে তুই কোন সেকশন এ র্ভতি হবি?? আমি উত্তরে বললাম আরে একটাতে হলেই হলো। কিন্তু আমার সেই বন্ধু মনির বলে A সেকশন এ ভুলেও র্ভতি হইস না, কেন জানতে চাইলে বলে A সেকশন এ “আলিম উদ্দিন” স্যার পড়া না পারলে খুব মারে। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম তাহলে B সেকশন এ র্ভতি হবো, সেই দিন আর র্ভতি হলাম না কারণ মনির সে দিন টাকা আনে নাই।  তাই দুইজন ঠিক করলাম এর পর দিন র্ভতি হবো এবং এর পরদিন র্ভতি হলাম। সে সময় আবার মনির আমার খুব ভালো বন্ধু ছিল। পরে অনেক বন্ধুর সাথে পরিচয় হয়।আমি আবার আমার বড় আব্বু কে সে সময় খুব ভয় পেতাম। বড় আব্বু বলে দিয়েছে সব সময় প্রথম ব্যাঞ্চ এ বসবি এবং রোল এক এর সাথে বন্ধুত্ব  করবি। তাই আমি আর মনির সব সময় প্রথম ব্যাঞ্চ এ বসতাম এই ভাবে এক মাস চলে গেলো এবার আমাদের ক্লাস টিচার্স ক্লাসে তিন জন ক্লাস কেপ্টেন নির্বাচন করা হবে। আর এই এক মাসে সবার সাথে ভালো একটা সম্পর্ক হয়ে গেল, এখন ও মনে আছে স্কুলে প্রথম গেলে কাগজ আর সাদা টেপ দিয়ে মোড়ানো বল দিয়ে ক্রিকেট খেলতাম আর ব্যাট হিসেবে সবাই বাসা থেকে ডায়েরি আনতাম। আমি আবার সবার থেকে ভালো খেলতাম, আমি,সামির,কাইউম না খেললে মনে হয় খেলাই হতো না। আর এর মধ্যেমে ক্লাসে সব বন্ধুর কাছে প্রিয় হয়ে উঠলাম।


এবার যখন ক্যাপ্টেন র্নিবাচন সবাই আমাকে নিয়ে টানা টানি করতে লাগলো এবং আমি আবার সব সময় ক্লাস এ যেতাম এবং ফাস্ট ব্যাঞ্চ এ বসতাম সব মিলিয়ে সাজ্জাদ  স্যার ও আমাকে পছন্দ করতেন।তাই সাজ্জাদ স্যার আমাকে ফাস্ট কেপ্টেন হিসেবে নির্বাচন করেন আর এবং এই ভাবে ষষ্ঠ শ্রেণি শেষ হল। আবার নুতন ক্লাস এই ভাবে  সপ্তম/অস্টম শ্রেণিতে ও আমি ক্লাস এর সেকেন্ড কেপ্টেন ছিলাম।কিন্তু অস্টম শ্রেণির শেষ দিকে আমি অনেক দুষ্টামি শুরু করলাম, আর এর হয়তো অনেক কারণ আছে যা প্রকাশ করা যায় না, রেখে দিতে হয় নিজের হৃদয়ে । আর এই ভাবে SSC পরিক্ষা দিলাম এবং ভালো রেজাল্ট ও করলাম। আর SWI স্কুলে আমার খুব ভালো বন্ধু ছিলো আইছম,পুলব,মাসুদ, মনির,ফাহিম আর জোজো।  আর বেশির ভাগ সময় চলাফেরা ছিলো এদের সাথে।

আমার জীবন এর  বলতে গেলে পুরো  সময় টা কেটেছে শহরে, খুব ইচ্ছা করতো যেতে কিন্তু সেটা হতো না, গ্রামে যেতাম ঈদ আর কোরবান এ গেলেও বেশি দিন এর জন্য না এই ৭-১০ দিন এর বেশি না,আবার গ্রীষ্মের সময় স্কুল বন্ধ দিলে পুরো ১০ দিন থাকতাম। কিন্তু এর মধ্যে কোন কাজ থাকলে বাড়ি যাওয়া হতো, কিন্তু দিনে গিয়ে দিনে চলে আসতে হত। তাই গ্রামের সব বন্ধুরাই আমি বাড়ি গেলে ঠেস মেরে কথা বলতো, কেন আসলি!  একটু পরেই তো চলে যাবি?? তার থেকে ভালো না আসতি, এটাই ভালো ছিল।

কিন্তু SSC পাশ করার পর আমি অনেক দিন গ্রামে ছিলাম প্রায় এক বছর এর উপরে আর আমার জীবনে হয়তো এই বছরটাই সব থেকে আনন্দের এবং সেরা বছর ছিল। আর এটাই ছিল আমার গ্রামে এতো দিন থাকা। আমার জীবন  এ  ছোট বেলা থেকে আম্মু,আব্বুর থেকে দূরেই থাকতে হয়েছিল। আজ চিন্তা করি সে সময় টা তে যদি মা,বাবার থেকে এতো দূরে না থাকতাম, তাহলে আজ হয়তো এতোটুকু আসতে পারতাম না। কিন্তু আমার কাছে গ্রামের এই সময়টাই ছিলো সব থেকে আনন্দের। কারণ মা,ভাই,বোন এর সাথে ছিলাম আর এর আগের সময় গুলা ছিল পাখির বাসার মত বন্দি,আর শহরের জীবন টা তো এমন হয়। কিন্তু গ্রামের জীবনটা ভিন্ন খোলা আকাশে পাখি যেমন উড়ে ঠিক তেমন। হয় তো এর আগে নিজের গ্রাম সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতাম না,আর আমাদের এলাকা যে অনেক প্রাকৃতিক জিনিস দেখার আছে সেটাও জানতাম না।কিন্তু সেই সময় থেকে আমার জীবন  এ আমি অনেক কিছু শিখেছি এবং অনেক কিছু দেখেছি যা আমি কল্পনা ও করি নি যে আমাদের এলাকায় এতো কিছু আছে।মোটামুটি সেই বছর নিজের পুরো এলাকা গুরা হলো এবং মানুষ শুলোকে ও চেনা এবং বুঝা হলো।

 

আমার জীবন  এর অনেক কথা লিখতে গিয়ে নিজের কলেজ এর কথাটাই লিখতে ভুলে গেলাম। ছোট বেলা থেকেই আমার স্বপ্ন ছিলো সিটি কলেজ এ পড়ার। কিন্তু এর কারণটা জানি না,  ভালো লাগতো ছোট থেকে তাই SSC দেওয়ার পর কলেজ চুজ দিলাম প্রথম এ দিলাম সিটিকলেজ এর পর বাকি চার টা মেজো ভাইয়া ঠিক করে দিয়েছিল।  সেই কলেজ গুলা প্রায় বাসা থেকে কাছে এমন কলেজ। মাইগ্রেশনে আমি আসি “ওমর গনি এম.ই.এস কলেজ এ” কিন্তু সেই দিন একটু খারাপ লাগলেও কিছু করার ছিলো না, আর আমার ছোট বেলার স্বপ্ন টা স্বপ্নই থেকে গেলো। আমি তাও কিছুটা খুশি ছিলাম চিন্তা করলাম MES কলেজ ও খারাপ না, আবার অন্য দিকে আমার বড় আম্মু খুব একটা পছন্দ করতেন না MES কলেজ। কারণ ছিলো MES কলেজ এ অনেক রাজনৈতিক সমস্যা আর মারামারি ও হয় প্রায়। পরে আমি জানতে পারি কলেজ রাজনীতি  নাকি আমাদের কলেজ থেকে প্রথম শুরু হয় , এটা শুনে কিছুটা অবাক হলাম। পরে বড় আম্মু বলে তোর ভাইয়াদের সাথে কথা বলে দেখ তোর ভাইয়ারা কি বলে। পরে ভাইয়ারা বলে নিজে ঠিক থাকলে কলেজ সমস্যা না,তাই আর বড় আম্মু ও অনুমতি দিলেন। তাই আর কোন দিকে না তাকিয়ে এর পর দিন র্ভতি হয়ে গেলাম।

   
 র্ভতি হওয়ার পর দিন কলেজ গেলাম যাওয়ার সময় চিন্তা করতে লাগলাম Mes কলেজ এ তো আমার কোন বন্ধু নাই, তাই সবার আগে বন্ধু বানাতে হবে আর পরের টা পরে। আবার এর জন্য কিছু দিন আমাকে কলেজ এ সব সময় যেতে হবে। কিন্তু সব থেকে মজার ব্যাপার হলো আমার বন্ধু বানানো লাগে নি, প্রথম দিন কলেজ এ ঢুকতে দেখা হয়ে গেলো রিয়াজ এবং আরো অনেক এ, রিয়াজ আবার আমাকে আরো ৭/৮ জন বন্ধুর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।  এবার আমরা ২০/২৫ জন এর একটা গ্রুপ হয়ে গেলাম আর সবার নাম্বার সবাই রাখলাম। একজন কলেজ এ না গেলে কেউ কলেজ যেতাম না আর তা ছাড়া প্রথম দিন কলেজ এ ডুকে একটু অবাক হলাম!!!  এক ক্লাস এ ৪৫০ জন ছাএ। আর ক্লাস রুম টা ও অনেক বড়,আমি যেদিন প্রথম ক্লাস এ যাই সে দিন ও ক্লাস এ ৩৯০/৩৯৫ জন ছিল। তার পর চিন্তা করলাম এটাই তাহলে কলেজ আর সবাই দেখি বন্ধু,বান্ধবী দের নিয়ে ব্যাস্ত । এবং আস্তে আস্তে সবার সাথে পরিচয় হয় এবং অনেক বন্ধু ও হয়ে গেলো।

 

 আর স্কুল জীবন এর বন্ধু দের সাথে দেখা হতো না, কিন্তু নিজের কাছে একটা প্রশ্ন থেকে যায়!  যাদের সাথে ৮-৯ বছর স্কুলে কাটালাম তাদের সাথে তেমন কথা বা দেখাই হতো না, সব সময় নুতুন বন্ধুদের সাথে সময় চলে যেত। হয়তো এটাই পৃথিবীর নিয়ম, আমি  চেষ্টা করি সবার খবর রাখতে বিশেষ করে স্কুল জীবন এর বন্ধু দের কথা বলছি,কিন্তু সব সময় স্মরণ করি কিন্তু বাস্তবতা এতো কঠিনা যে চাইলে ও সময়ের জন্য সেটা সম্ভব হয় না। হয়তো কেউ কারো জন্য নায় আবার সবাই সবার জন্য। 

 

ফেসবুক কমেন্টস

Reactions

0
0
0
0
0
0
Already reacted for this post.

প্রতিক্রিয়া