আব্রাহাম বেঞ্জামিন ডি ভিলিয়ার্স এর খেলোয়াড়ী জীবন

Please log in or register to like posts.
পোস্ট
AB_de_Villiers, AB_de, AB, ডি_ভিলিয়ার্স, ক্রিকেটের বরপুত্র, ক্রিকেটীয়

ডি ভিলিয়ার্স ছিলেন ডান হাতি মারকুটে তথাপি দৃষ্টি নন্দন ক্রিকেটীয় শটের একচ্ছত্র অধিপতি ।   ক্রিকেটের বরপুত্র তিনি । টেস্টে ব্যাট করেছেন ১১৪ বার । ১১৪ ম্যাচে ৫০.৬৬ গড়ে রান করেছেন ৮৭৬৫ টি । শতক হাকিয়েছেন ২২ টি , অর্ধশতক ৪৬ টি।  ওয়ানডেতে সমান তালে ২২৮ ম্যাচে ৫৩.৫০ গড়ে রান করেছেন  ৯৫৭৭ । সর্বোচ্চ ১৭৬শতক হাকিয়েছেন ২৫ টি অর্ধশতক ৫৩ টি।টি ২০ বাদ যাবে কেনো! এখানেও ৭৮ ম্যাচে ২৬.১২ গড়ে রান করেছেন ১৬৭২ । সর্বোচ্চ রান ৭৯ । শতক নেই। ৫০ আছে ১০ টি ।  টানা ৭৮ টেস্ট ইনিংস এ শুন্য রান করেন নি একবারো, এ এক অনন্য রেকর্ড ।অবশেষে বাংলাদেশে এসে এর শেষ হয়। জানিনা মনে আছে কিনা, অনেকেরি হয়ত মনে থাকবে ২০১১-২০১২ সালের এবির কথা। সে সময় টায় অস্ট্রেলীয়া ও শ্রীলংকার বিপক্ষে নিজেকে মেলে ধরেন এবি। সেই শেষ টেস্টের কথা নিশ্চই মনে আছে যেখানে অপরাজিত ১৬৫* রান করে দলকে সিরিজ জেতানোয় ভূমিকা রাখেন এবি। ম্যান অদ দি সিরিজ হন, ১১৭.৬৬ গড়ে ৩৫৩ রান করেন ।  

 

 এর পরে পান অধিনায়কের দায়িত্ব । অধিনায়ক এবির নেতৃত্বে দক্ষিন আফ্রিকা জয় করে একাধিক ওডিয়াই সিরিজ, সেখানে বলে দিতে হয় না এবির ব্যক্তিগত নৈপুন্যের কথা। মনজুড়ানো  সব ক্রিকেট শটে মাতিয়ে তুলেন ক্রিকেট বিশ্বকে। ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি , ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকা( CSA ) , ( Cricket South Africa ) কর্তৃপক্ষ ২০১৫ এর ক্রিকেট বিশ্বকাপের জন্যে  ১৫ সদস্যের চূরান্ত তালিকা প্রকাশ করে। ডিভিলিয়ার্স কে দেওয়া হয় অধিনায়কত্বের ( captaincy ) দায়িত্ব। গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় খেলায় মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ভারতীয় দলের বিপক্ষে হেরে যায় দক্ষিন আফ্রিকা।  এটা ছিলো ভারতের বিপক্ষে তাদের ক্রিকেট বিশ্ব কাপের ইতিহাসে প্রথম হার। দলের ধীরগতির বোলিং এর কারনে অধিনায়ক এবি সহ অন্যান্য খেলোয়াড়কে ২০% জরিমানা করা হয়। ২০১৫ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি । গ্রুপ পর্বের তৃতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এর বিপক্ষে এবিডির অসাধারন ক্রিড়া নৈপুন্যে দক্ষিন আফ্রিকা সংগ্রহ করে তাদের বিশ্ব কাপের ইতিহাসের  দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪০৮ রান- ৫ উইকেটের বিনিময়ে। সিডনির সেই ম্যাচের স্মৃতি এখনো হয়ত রোমাঞ্চ জোগায় এবিডি কে, যে ম্যাচে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইতিহাসের দ্রুততম হিসেবে মাত্র ৬৪ বলে সংগ্রহ করেন ১৫০ রান । তাছাড়া তাঁর এই সংগ্রহটি বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম শতক।

একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দ্রুততম ১৫০,১০০,৫০ রানের রেকর্ড এবির দখলে ।  বিশ্বকাপে বিশ্ব দেখেছে এবির অসাধারন ক্রিড়া শৈলি । এবি মাঠে নামলেই যেন ক্রিকেট প্রেমীরা রোমাঞ্চিত হয়ে ওঠেন। যে কোন বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২০ টি  ছক্কা মারার রেকর্ড তাঁর দখলে।সকল বিশ্বকাপ মিলিয়ে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড ও তাঁর দখলে। বল শুন্যে ভাসিয়ে মাঠের বাইরে পাঠিয়েছেন ৩৬ বার ( বিশ্বকাপের আসর গুলোতে) । ২০১৫ এর বিশ্বকাপে এবির টিম কোয়ার্টার ফাইনালে উত্তীর্ন হয়। এবির দক্ষ নেতৃত্বে দক্ষিন আফ্রিকা শ্রীলঙ্কাকে কোয়ার্টার ফাইনালে পরাজিত করে উঠে যায় সেমি ফাইনালে। তবে বরাবরের মত কপাল পুড়ে দক্ষিন আফ্রিকার । সেমি ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পরে এবি ডি ভিলিয়ার্স এর টিম। এই নিয়ে প্রোটিয়ারা বিশ্বকাপের সবকটি সেমি ফাইনালে চতুর্থ বারের মত পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ গ্রহন করে ।এবি ছিলেন পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে আপন মহিমায় উজ্জ্বল ।   পুরো প্রতিযোগিতায় করেছেন ১ টি সেঞ্চুরি আর ৩ টি অর্ধ শতক । গড় ছিল চোখে পড়ার মত। ৯৬.৪০ গড়ে নিজের ঝুলিতে পুরে নেন ৪৮২ রান। প্রতিযোগিতায় ৩য় সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারি ছিলেন তিনি।

দেখতে দেখতে শেষ হয় ২০১৫ বিশ্বকাপ। বাংলাদেশ এ একদিনের সিরিজে এবি ডি ভিলিয়ার্স কে অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত করা হয়। কিন্তু ২০১৫ এর বিশ্বকাপে সেমি-ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দলীয় ধীর গতির বলিং এর মাশুল হিসেবে তার একটি ম্যাচ খেলার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।প্রথম উইকেট রক্ষক হিসেবে তিনি এক টেস্টে সেঞ্চুরি এর সাথে সাথে ১০ টি আউট করেন। রেকর্ডের বরপুত্র এবি ডি ,১৮ মার্চের ৩য় ওয়ানডেতে  পাকিস্তানের বিপক্ষে হাশিম আমলার সাথে জুটি বেধে ৩য় উইকেটে ২৩৮ রানের রেকর্ড করেন।সেই ম্যাচে এবিডি করেছিলেন ১২৮ রান। ১২৮ রান তিনি সাজিয়েছিলেন ১২ টি চার ও তিনটি ছক্কার মারে।সবচেয়ে কম ওডিয়াই খেলে সাত হাজার রানের ক্লাবে ঢুকার রেকর্ডের মালিক ও এবি ডি ভিলিয়ার্স। রেকর্ড ভাঙ্গার গান বা কবিতা যাই বলেন সেখানেই থেমে থাকেনি। মাত্র ৩১ বল খেলে ওয়ানডে ইতিহাসের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড ও এবির খাতায় সযত্নে লেখা আছে। ২০১৫ সালের ১৮ জানুয়ারি শতক টি এসেছিল ক্যারিবিয়ান দের বিপক্ষে।১৬ বলে ওয়ানডে ইতিহাসের দ্রুত তম হাফ সেঞ্চুরিও তাঁর দখলে। সবাইকে অবাক করে দিয়ে নানা গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে ২০১৮ এর ২৩ মে দক্ষিন আফ্রিকার এই ডান হাতি হার্ড হিটার,স্টাইলিস্ট ব্যাটসম্যান অবসরের ঘোষনা দেন। দেশ-বিদেশের হাজারো ভক্তের মনে দাগ কেটে গেছে তাঁর এ বিদায়। ক্রিকেটের বরপুত্র ডি ভিলিয়ার্স   এর বিদায় মেনে নিতে পারছেন না অনেকেই।

রেফারেন্স     bn.wikipedia.org

ফেসবুক কমেন্টস

Reactions

0
0
0
0
0
0
Already reacted for this post.

প্রতিক্রিয়া

মন্তব্য করুন